বি এম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টার।
ষোলো মাসের সন্তানকে আঁকড়ে রেখেছেন মা। জটিল হৃদ্রোগে আক্রান্ত সদ্যোজাতের প্রাণ সংশয় হয়েছিল। ঠিক সময়ে চিকিৎসা পেয়ে দেওঘরের বাসিন্দা, আনমোল সিংহ নামে ওই শিশু এখন সুস্থ। সহপাঠীদের খেলাধুলো করতে দেখে মন খারাপ হয়ে যেত পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা
জয়দেব ঋষির। ইচ্ছে হলেও হৃৎপিণ্ডের কঠিন রোগের শিকার হওয়ায় তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার উপায় ছিল না ওই কিশোরের। বি এম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টারের তিরিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে সোমবার কঠিন অসুখকে হারিয়ে জীবনকে আলিঙ্গন করার মুহূর্তের শরিক হলেন আনমোল, জয়দেবরাও।
এ দিন আনমোলের মা চন্দাদেবী জানান, তাঁর দু’বার গর্ভপাত হয়েছিল। বিয়ের ছ’বছর পরে সন্তান না-হওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে বিরূপ আচরণ করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা। চন্দার কথায়, ‘‘এক সময়ে মনে হতো, আমারই হয়তো কোনও দোষ আছে!’’ ২০১৮ সালের অক্টোবরে আনমোলের জন্ম হওয়ার পরে তাই খুশির অন্ত ছিল না চন্দার। কিন্তু জন্মের কিছু দিন পরে আনমোলের শরীরে নীলচে আভা দেখা যায়। একাধিক হাসপাতাল ঘুরে শেষমেশ ওই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয় আনমোলের। পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়োলজিস্ট শুভেন্দু মণ্ডল জানান, আনমোলের রোগের নাম ‘আর্টেরিয়াল সুইচ’। তার হৃৎপিণ্ডে ডান দিকের শিরা বাঁ দিকে ছিল। আর বাঁ দিকের শিরা ছিল ডান দিকে। এর জেরে দূষিত রক্ত দেহেই ফিরে যাচ্ছিল। ঠিক সময়ে অস্ত্রোপচার না হলে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা ছিল আনমোলের।
আট বছর বয়সে জয়দেবের রোগ ধরা পড়েছিল। ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সারিয়ে তুলেছেন এখন আঠারো বছর বয়সী জয়দেবকে। শুভেন্দুবাবুর কথায়, ‘‘জয়দেবের করোনারি আর্টারি টু ভিনাস ফিসচুলা হয়েছিল। করোনারি আর্টারি থেকে একটি উপশিরা হার্টের ডান দিকের অংশে গিয়ে মিশেছিল। সচরাচর যা দেখা যায় না।’’ অস্ত্রোপচার না করে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টির সাহায্যে জয়দেবের চিকিৎসা করা হয়।
হাসপাতালের সিওও সিমরদীপ সিংহ গিল এ দিন বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে বৃদ্ধ, কিশোর, শিশুদের সুস্থ করে একাধিক পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে আমরা গর্বিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy