আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বিভিন্ন মহল থেকে সোমবারের ওই ভাঙচুরের ঘটনার নিন্দাও করা হয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি সামনে এসেছে হাসপাতালের পরিকাঠামোগত সমস্যার কথাও।
ইমার্জেন্সির চিকিৎসকদের একটি বড় অংশই এ দিন জানিয়েছেন, ওই সময়ে একটি ট্রলিও ছিল না ইমার্জেন্সিতে। ছিল না অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থাও। রাজ্যের অন্যতম প্রধান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে কার্যত ধুঁকছিলেন বিশ্বজিৎ মল্লিক। বেলগাছিয়ার বাসিন্দা বছর তেইশের ওই যুবকের পরিজনেরা বার বার বলা সত্ত্বেও বেশ কিছুক্ষণ তাঁকে শোওয়ানোর মতো কোনও জায়গার ব্যবস্থা করা যায়নি হাসপাতালে। তখন থেকেই উত্তেজনা তৈরি হতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় ভাঙচুর।
এ দিন সকালে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ধর্মেন্দ্র সিংহ, রোহিত মালি, সুরজ শাহ ও রীতারানি মান্না নামে চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে তাদের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়। ধৃতেরা মৃতের আত্মীয় এবং প্রতিবেশী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিশ্বজিতের কাকা অমর মল্লিক মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমাদের যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। সে নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। ওই ভাঙচুরের ঘটনাকে আমরা সমর্থন করছি না। কিন্তু এ কথা ঠিক, হাসপাতালে গিয়ে একজন মুমূর্ষু রোগীর যা পাওয়ার কথা, তার কিছুই আমার ভাইপো পায়নি। সঠিক সময়ে চিকিৎসাটুকু পেলে এত বড় ক্ষতি হয়তো আটকানো যেত।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোমবার বিকেলে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসেন বিশ্বজিৎ। তাঁর পরিবারের দাবি, জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ তাঁরা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এলেও কোনও চিকিত্সক রোগীর প্রতি মনোযোগই দেননি। তাঁদের অভিযোগ, বেশ কিছুক্ষণ পরে প্রাথমিক কিছু ওষুধ দিয়ে চিকিত্সকেরা তাঁদের রোগীকে বাড়ি নিয়ে চলে যেতে বলেন। এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘ওর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, বারবার হেঁচকি উঠছিল— কিন্তু কোনও অক্সিজেনের ব্যবস্থাও করেননি চিকিত্সকেরা।’’ বিশ্বজিৎকে বাড়ি নিয়ে গেলে তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। ফের আরজি করে নিয়ে এলে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য পরিকাঠামোর অভাবের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ প্রহরা আরও বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা চলছে। কিন্তু পরিকাঠামো? সেটা নিশ্চিত করতে কী ভাবছেন তাঁরা? সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy