মৃত সেই কুকুরটি। নিজস্ব চিত্র
ইকো পার্কে গিয়ে কুকুরের কামড় খেলেন এক মহিলা-সহ চার জন। শনিবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় জখম তিন জনকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এক জনের চিকিৎসা হয় চিনার পার্ক সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে। পুরো ঘটনায় ইকো পার্কের বিরুদ্ধে অব্যবস্থার অভিযোগে সরব হয়েছেন জখমদের পরিজনেরা।
এ দিন ‘সেভেন ওয়ান্ডার্স’ দেখার জন্য সপরিবার ইকো পার্কে গিয়েছিলেন নিউ টাউনের রিয়া ঘোষ। তাঁর বাবা শ্যামল ঘোষ বেঞ্চে বসেছিলেন। রিয়া জানান, আচমকা একটি কালো কুকুর তাঁর ছেলে আদ্রিককে কামড়াতে যায়। কোনও রকমে ব্যাগ দিয়ে বাচ্চাকে রক্ষা করেন তিনি। কিন্তু আদ্রিক রক্ষা পেলেও শ্যামলবাবুর পায়ে কামড় বসিয়ে দেয় কুকুরটি। সে দিকে চোখ যেতেই রিয়া, তাঁর মা এবং স্বামী কুকুরের হাত থেকে শ্যামলবাবুকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। রিয়া বলেন, ‘‘এক বার ছা়ড়ার পরে আবার বাবার পায়ে কামড়ে দিল।’’ এ দিন ইকো পার্কে প্রায় সাড়ে আট হাজার দর্শক এসেছিলেন। ‘সেভেন ওয়ান্ডার্স’-এর দর্শকই ছিলেন প্রায় তিন হাজার। ওই ঘটনায় বাকি দর্শকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। সকলেই পার্ক থেকে বেরোনোর জন্য দৌড়তে থাকেন। রিয়া বলেন, ‘‘হুড়োহুড়ির মধ্যে আমার মা ও বাচ্চা পড়ে যায়।’’
কামড়ের শিকার রাঁচীর বাসিন্দা আশিসরঞ্জন সিংহের পরিবারও। তাঁর মেয়ে অনন্যা জানান, বোন আর্না মায়ের সঙ্গে শৌচাগারে যাচ্ছিল। আচমকা দৌড়ে এসে অনন্যার মা সুরেখার পায়ে কামড়ে দেয় কুকুরটি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, কুকুরটি পাগল। একই মত আক্রান্তদের। কামড়ে জখম আরও দু’জন। তাঁদের এক জন নিরাপত্তারক্ষী বিক্রম খাঁড়া। অন্য জনের পরিচয় জানা যায়নি।
ইকো পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অব্যবস্থার অভিযোগে সরব হয়েছেন আক্রান্তেরা। রিয়া বলেন, ‘‘বাচ্চাকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছি। বাবার ওই অবস্থা। কর্তৃপক্ষের কাছে যে ব্যবহার আশা করেছিলাম, তা পাইনি। তাজমহলের রক্ষী বলছেন, সেখানে যখন কামড়ায়নি, তখন তাঁর দায়িত্ব নেই। সেভেন ওয়ান্ডার্সে ঢুকতে আলাদা টাকা নেওয়া হয়। সেখানে কেন কুকুরের কামড় খাব?’’ অনন্যা বলেন, ‘‘ইকো পার্ক কর্তৃপক্ষ কোনও দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। দু’দিনের জন্য বেড়াতে এসেছিলাম। এত খারাপ অভিজ্ঞতা হবে ভাবিনি।’’ তবে নিরাপত্তারক্ষী বিক্রমের প্রশংসা করেন রিয়া। তিনি বলেন, ‘‘ওঁর জন্য কুকুর আর কাউকে কামড়াতে পারেনি।’’
ঘটনার পরে এ দিন ইকো পার্কে কুকুরটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নিরাপত্তারক্ষীরাই কুকুরটিকে মেরে ফেলেন। যদিও পার্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, রক্ষীদের বলা হয়, কুকুরটিকে বার করে দিতে। তার পরে কী হয়েছে, জানা নেই। অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করে কর্তৃপক্ষ জানান, পার্কের অ্যাম্বুল্যান্সেই জখমদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy