Advertisement
E-Paper

হেলমেট নেই, বাইক উল্টে মৃত্যু শিশুর

সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে নিউ টাউনে। মাথায় হেলমেট না পরে বাইকে সওয়ার হওয়া যে কতটা বিপজ্জনক, নিজের চার বছরের ছেলে দেবাংশকে হারিয়ে এখন তা বুঝতে পেরেছেন বাবা ঋত্বিক মিশ্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:২৫
অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেবাংশকে। সোমবার, নিউ টাউনে। নিজস্ব চিত্র

অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেবাংশকে। সোমবার, নিউ টাউনে। নিজস্ব চিত্র

বাবার মাথায় ছিল হেলমেট। চার বছরের ছেলের মাথায় সেই ‘রক্ষাকবচ’ ছিল না। সেই অবস্থাতেই বাবা ঝোড়ো গতিতে চালাচ্ছিলেন মোটরবাইক। একটি বাঁকের মুখে বাইক নিয়ন্ত্রণ হারাতেই ছিটকে পড়ে ছেলে। রাস্তার ধারে থাকা পাথরের চাঙড়ে গিয়ে লাগে তার মাথা। বাবার সামনেই মৃত্যু হয় ছেলের।

সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে নিউ টাউনে। মাথায় হেলমেট না পরে বাইকে সওয়ার হওয়া যে কতটা বিপজ্জনক, নিজের চার বছরের ছেলে দেবাংশকে হারিয়ে এখন তা বুঝতে পেরেছেন বাবা ঋত্বিক মিশ্র। যে ভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে দেবাংশ মাথায় হেলমেট থাকলে তার যে এ ভাবে মৃত্যু হত না, তা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরাও।

বিধাননগর ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শিশুটির মাথায় হেলমেট থাকলে দুর্ঘটনার পরিণাম এতটা খারাপ হত না। অভিভাবকেরাই যদি না বোঝেন, তা হলে কী আর বলব!’’ তবে যে ভাবে রাস্তার ধারে মেট্রো রেল পাথর ফেলে রেখেছে, তাতে গোটা এলাকাই দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

পুলিশ জানায়, ওডিশার নয়াগড়ের বাসিন্দা ঋত্বিক ব্যবসার কাজে ঘন ঘন কলকাতায় যাতায়াত করেন। এ জন্য তাঁর নিউ টাউনে ফ্ল্যাট কেনারও পরিকল্পনা ছিল। ফ্ল্যাট পছন্দ করার জন্য রবিবারই ওডিশা থেকে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন ঋত্বিক। আটঘরার মাঝেরপাড়ায় একটি বাড়ি ভাড়া নেন ঋত্বিক। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে পরিচিত এক জনের বাইকে ছেলেকে নিয়ে ফ্ল্যাট দেখতে বেরোন ঋত্বিক। গন্তব্য ছিল নিউ টাউন।

পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ আকাঙ্ক্ষা মোড়ের কাছে ঋত্বিকের বাইক একটি বাঁকের মুখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। রাস্তার ধারের রেলিংয়ে ধাক্কা মারলে বাইক থেকে ছিটকে পড়ে দেবাংশ। মেট্রো প্রকল্পের কাজের জন্য রাস্তার ধারে বহু জায়গায় সিমেন্টের চাঙড় পড়ে রয়েছে। তারই একটিতে ধাক্কা লেগে মাথায় গুরুতর চোট পায় শিশুটি। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘হঠাৎ করে একটা আওয়াজ। ঘুরে দেখি, একটি ছেলে পড়ে আছে রাস্তায়। মাথার বাঁ দিকের অংশ থেকে রক্ত বেরিয়ে রাস্তা ভেসে যাচ্ছে।’’

ইতিমধ্যেই আশপাশের এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে যান। তড়িঘড়ি চিনার পার্ক সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বাবা ও ছেলেকে। দেবাংশকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বাবা ঋত্বিকের আঘাত তেমন গুরুতর নয়। তবে মানসিক ভাবে একেবারে বিধ্বস্ত তিনি। ছেলের মৃত্যুর খবর ঋত্বিককে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও মাঝেমধ্যেই তিনি ছেলে সুস্থ আছে কি না, হাসপাতালের কর্মীদের কাছে তা জানতে চাইছেন। তার পরেই আবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয়েছে দেবাংশের। ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেও আপাত ভাবে একেবারে স্বাভাবিক আচরণ করছেন দেবাংশের মা। সেটাও চিকিৎসকদের ভাবাচ্ছে। রাতের বিমানে ওডিশা থেকে ঋত্বিকের পরিজনেরা কলকাতায় এসেছেন।

bike accident accident New Town
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy