রাজধানী দিল্লিতে দূষণের মাত্রা চোখ খুলে দিয়েছে দেশের সকল প্রথম সারির শহরের। শহর কলকাতাও দিল্লির ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরিবেশ দূষণ রুখতে একের পর এক পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে। এ বার শীতের মরসুমে শহরের বায়ুদূষণ উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছোনোর প্রেক্ষিতে রাস্তার ধারে শুষ্ক পাতা ও আবর্জনা পোড়ানো বন্ধ করতে পুলিশের সহায়তা চাইছে কলকাতা পুরসভা। বায়ুর মানের ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপের পথে হাঁটতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভার পরিবেশ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডের সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইন-চার্জদের কাছে চিঠি পাঠানো হবে, যাতে শীতের ভোরবেলায় কিংবা সন্ধ্যায় বা রাতে রাস্তার ধারে পাতা পোড়ানোর ঘটনা নজরদারি করে বন্ধ করা যায়।
পুরসভার পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, শুধুমাত্র পুরসভার কর্মীদের পক্ষে এই ধরনের কাজ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। শীতের সময় বহু মানুষ গা গরম করা বা এলাকা পরিষ্কারের অজুহাতে রাস্তার ধারে শুকনো পাতা ও আবর্জনা জ্বালান। এর ফলে বিপুল পরিমাণ ধোঁয়া ও ক্ষতিকর কণিকা বাতাসে মিশে বায়ুদূষণ বাড়িয়ে তোলে। তাই এই প্রবণতা বন্ধ করতে পুলিশের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
আরও পড়ুন:
বৃহস্পতিবার পুর অধিবেশনে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, শীতকালে বায়ু মান উন্নত রাখতে একাধিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। নিয়মিত রাস্তা ধোঁয়া, গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জল ছিটানো, নির্মাণস্থলে ধুলো নিয়ন্ত্রণের মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর কথায়, শুধু এই উদ্যোগগুলি যথেষ্ট নয়। রাস্তার ধারে পাতা পোড়ানোর মতো অভ্যাস বন্ধ না হলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে উঠবে।
শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারাও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পর পাতা পোড়ানোর ফলে এলাকায় ধোঁয়ায় ঢেকে যায় পরিবেশ। এতে শ্বাসকষ্ট, কাশি, চোখ জ্বালা ও বয়স্কদের শারীরিক সমস্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এই ধোঁয়া মারাত্মক ক্ষতিকর হয়ে উঠছে। পরিবেশবিদদের মতে, শুষ্ক পাতা পোড়ানো থেকে নির্গত সূক্ষ্ম কণিকা বায়ু মান সূচককে আরও খারাপ করে তোলে। তাই প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। পুরসভা আশা করছে, পুলিশ ও নাগরিকদের যৌথ সহযোগিতায় এই সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।