Advertisement
E-Paper

বিক্ষোভের জেরে রোগী কমল ছ’হাজার!

বহির্বিভাগে রোগী কমেছে এসএসকেএম এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের সোমবার এনআরএসে নতুন এবং পুরনো মিলিয়ে মোট রোগী হয় সাড়ে তিন হাজারের কিছু বেশি।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:২৮
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছে অস্থির পরিস্থিতি। যার জেরে ব্যাহত হয়েছে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। এমনকি কোথাও কোথাও বন্ধ হয়ে রয়েছে সড়কপথ। মানুষের ভোগান্তির প্রকট প্রভাব পড়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবাতেও। দূর-দূরান্ত থেকে শহরে জরুরি চিকিৎসা করাতে আসতে পারছেন না অসংখ্য মানুষ। যে কারণে গত দু’দিনে শহরের পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজের এক-একটিতে বহির্বিভাগে আসা রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটা কমেছে বলে জানাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। শুধু কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ এবং এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ, এই তিন হাসপাতালের বহির্বিভাগেই দু’দিনে রোগী গড়ে ছ’হাজার কমেছে! ফলে বহু মানুষ চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে স্বাস্থ্য কর্তাদের আশঙ্কা।

বহির্বিভাগে রোগী কমেছে এসএসকেএম এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের সোমবার এনআরএসে নতুন এবং পুরনো মিলিয়ে মোট রোগী হয় সাড়ে তিন হাজারের কিছু বেশি। মঙ্গলবার তা আরও কমে হয়েছে তিন হাজার একশো। যেখানে গত সপ্তাহের ওই দু’দিন রোগীর সংখ্যা ছিল চার হাজার আটশো এবং চার হাজার দুশো। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আবার চলতি সপ্তাহের সোমবার বহির্বিভাগে আসা রোগীর সংখ্যা ছিল চার হাজার। পরদিন তা কমে দাঁড়ায় সাড়ে তিন হাজার। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, সাধারণত সপ্তাহের শুরুতে বহির্বিভাগে পাঁচ হাজারেরও বেশি রোগীর ভিড় হয়। স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার রোগী কমেছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেও। যেখানে প্রতিদিন বহির্বিভাগে প্রায় পাঁচ হাজার রোগীর চাপ সামলাতে হয় চিকিৎসকেদের, দু’দিনে সেখানে গড়ে দেড় হাজার রোগী কমেছে বলে খবর।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। কী কারণে, সেটা বলা সম্ভব নয়।’’ এনআরএসের আধিকারিকদের মতে, ‘‘হাসপাতালের গেট থেকেই বোঝা যায় বহির্বিভাগে রোগীর চাপ কেমন। এই দু’দিন তা বোঝা যায়নি। সপ্তাহের শুরুতেও বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারে ভিড় নেই, এটা ভাবা যাচ্ছে না!’’

গত শুক্রবার থেকে মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় রেলের সম্পত্তি ভাঙচুর এবং অগ্নি সংযোগের ঘটনায় ব্যাহত হয়েছে ট্রেন চলাচল। এখনও বন্ধ রয়েছে কৃষ্ণনগর, লালগোলা শাখার ট্রেন। রবিবার থেকে শিয়ালদহ-বজবজ শাখায় বন্ধ ছিল ট্রেন। সোমবার সন্ধ্যা থেকে ওই শাখায় ট্রেন চলতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, মুর্শিদাবাদ, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এনআরএসের বহির্বিভাগে আসেন। নদিয়া জেলার রোগীদের বড় অংশ এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। ফলে রোগীর সংখ্যা সেখানে কমেছে। অন্য দিকে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে হাওড়া, মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন জায়গার মানুষ চিকিৎসা করাতে আসেন। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে আসা রোগীর সংখ্যা বেশি। তাই সেখানেও রোগী কমেছে বলে মত আধিকারিকদের।

স্বাস্থ্য ভবনের বিভাগীয় কাজেও পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার আয়ুষের একটি বৈঠক ছিল। সেখানে ১৯ জন মেডিক্যাল অফিসারের মধ্যে ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেডিক্যাল অফিসারেরা কেন বৈঠকে আসেননি, তা নিয়ে দফতরের এক কর্তা উষ্মা প্রকাশ করেন বলে দফতর সূত্রের খবর।

যদিও অপ্রতুল যানবাহন এই অনুপস্থিতির কারণ বলে জানা গিয়েছে। পরিবার কল্যাণ বিভাগের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও পিছিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ভিডিয়ো কনফারেন্সের সাহায্যে কাজ সেরেছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা।

CAA Citizenship Amendment Act Protest Calcutta Medical College NRS Hospital National Medical College
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy