Advertisement
১১ ডিসেম্বর ২০২৩
jump

Kolkata: ‘দেবদূত’ এসে বাঁচাবে! কলকাতায় ১১ তলা থেকে লাফ মেরে প্রাণ গেল কিশোরের

শনিবার ফুলবাগানের একটি আবাসনে ঘটনাটি ঘটেছে। সুইমিং পুলের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে বিরাজের দেহ। পার্কসার্কাসের একটি নামী স্কুলের ছাত্র সে।

বহুতলের ১১ তলা থেকে লাফ দিয়ে প্রাণ গেল বিরাজ পাচিশিয়া নামে এক কিশোরের।

বহুতলের ১১ তলা থেকে লাফ দিয়ে প্রাণ গেল বিরাজ পাচিশিয়া নামে এক কিশোরের। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:৪৭
Share: Save:

ওয়েব সিরিজ দেখে অনুপ্রাণিত! বহুতলের ১১ তলা থেকে লাফ দিয়ে প্রাণ গেল বিরাজ পাচিশিয়া নামে এক কিশোরের। শনিবার ফুলবাগানের একটি অভিজাত আবাসনে ঘটনাটি ঘটেছে। আবাসনের সুইমিং পুলের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে বিরাজের দেহ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, একটি জাপানি ওয়েব সিরিজ দেখার পরই বহুতলের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে ওই কিশোর।

ফুলবাগানের ক্যানাল সার্কুলার রোডের বাসিন্দা বিরাজ। পার্ক সার্কাসের একটি নামী স্কুলের ছাত্র সে। সরস্বতী পুজো নিয়ে বাড়িতে যখন সবাই ব্যস্ত, তখন সকলের নজর এড়িয়ে ছাদে চলে যায় বিরাজ। এর কিছু ক্ষণ পরেই আওয়াজ পেয়ে সুইমিং পুলের কাছে ছুটে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা দেখেন, বিরাজের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে মাটিতে। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, অনলাইন ক্লাসের জন্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেট কিনে দেওয়া হয়েছিল বিরাজকে। ওই গ্যাজেট নিয়েই সারা দিন থাকতে সে। গ্যাজেটটি উদ্ধার করে একটি জাপানি ওয়েব সিরিজ সম্পর্কে জানতে পারে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, ‘প্ল্যাটিনাম এন্ড’ নামক ওই জাপানি সিরিজ দেখেই ছাদ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিরাজ। ফুলবাগান থানার এক পুলিশকর্তা জানান, ওই সিরিজে দেখানো হয়েছে, কিশোর নায়ক ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয় এবং তাকে বাঁচায় এক ‘দেবদূত’। এর পরেই ওই কিশোর ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকা্রী হয়। এই গল্প দেখেই হয়তো ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে বিরাজ।

অতীতেও দেখা গিয়েছে, ব্লু হোয়েল, পাবজি-র মতো মোবাইল গেম খেলায় মেতে প্রাণ গিয়েছে বহু শিশুর। ইদানীং শিশুদের মধ্যে আচরণগত নেশা বাড়ছে বলে জানান মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘সিগারেট, মদ্যপানের মতো বা কেমিক্যাল নেশার মতোই আচরণগত নেশা হয়ে থাকে। মোবাইলে গেম খেলা বা কোনও ছবি-সিরিজ বা সিরিয়াল দেখার নেশা এই পর্যায়ে পড়ে। অতিমারি-পর্বে দেখা গিয়েছে, অনলাইন ক্লাস চলাকালীন আলাদা উইন্ডো খুলে অন্য কাজ করছে বাচ্চারা। আগে বাচ্চারা মাঠে খেলাধুলো করত, এখন মোবাইলে গেম খেলে। বাচ্চারাও নিজেদের প্রমাণ করতে চায়, ওদের মধ্যেও পারিপার্শ্বিক চাপ থাকে। এ সব থেকেই ওরা ঝুঁকি নেয়।”

বাবা-মায়েদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, ‘‘অনলাইন ক্লাস এবং শিশুদের মোবাইল ব্যবহার নিয়ে অভিভাবকদের আরও সজাগ হতে হবে। সন্তান মোবাইল নিয়ে কী করছে, না-করছে, মাঝে মাঝে একটু দেখে নেওয়া জরুরি। সন্তানের ডিজিটাল ডিটক্স অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য মা-বাবার উচিত, সন্তানকে আরও সময় দেওয়া। তাদের সঙ্গে গল্প করা। বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে খেলাধুলো বন্ধই হয়ে গিয়েছে। তাই মাঝে মধ্যে শিশুদের বাড়ির বাইরে নিয়ে যাওয়াও জরুরি। তবে নজর রাখার নামে শিশুর উপর গোয়েন্দাগিরি করা একেবারেই উচিত হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE