সুজাতা সমাদ্দার
বছর দুই আগে বিয়ে হয়েছিল। অভিযোগ, সেই থেকেই শ্বশুরবাড়িতে নিয়মিত অত্যাচার চলত বধূর উপরে। আর মানিয়ে নিতে না পেরে মাস কয়েক আগে বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে যান ওই বধূ। কিছু দিন সেখানে থাকলেও তাঁকে ফের বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো হয়। তবে অত্যাচার থামেনি বলেই অভিযোগ। সোমবার গভীর রাতে ওই বধূরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে চিৎপুর থানা এলাকার শ্রীনাথ মুখার্জি লেনের শ্বশুরবাড়িতে। মৃতার নাম সুজাতা সমাদ্দার (৩৫)। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মৃতার স্বামী অরিত্র সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৫ সালে দুর্গাপুরের বাসিন্দা সুজাতার সঙ্গে আলাপ হয় উত্তর কলকাতার বাসিন্দা অরিত্রের। ২০১৬ সালে বিয়ে হয় তাঁদের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবা়ড়িতে লাঞ্ছনার শিকার হতেন সুজাতা। প্রায়ই তিনি দুর্গাপুরের বাড়িতে চলে যেতেন। মঙ্গলবার সকাল ছ’টা নাগাদ সুজাতার শ্বশুরবাড়ির এক প্রতিবেশী তাঁর দিদিকে ফোন করে জানান, ওই বধূ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। সুজাতার পরিবারের লোকেরা দুর্গাপুর থেকে কলকাতায় এসে জানতে পারেন, সুজাতার মৃত্যু হয়েছে। সুজাতার জামাইবাবু কালুরাজ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘শ্যালিকাকে ওর স্বামী আর শাশুড়ি মিলে চক্রান্ত করে মেরে ফেলেছে।’’ তাঁর দিদির অভিযোগ, ‘‘বিয়ের পর থেকেই আমার বোনের উপরে অত্যাচার হত। মাস সাতেক আগে সুজাতা দীর্ঘদিনের জন্য দুর্গাপুরের বাড়িতে চলে গিয়েছিল। আমরা বুঝিয়ে ওকে শ্বশুরবাড়ি পাঠালেও অত্যাচার কমেনি।’’ মৃতার জামাইবাবুর আরও অভিযোগ, গত দু’মাস ধরে সুজাতাকে ফোন করলেও ফোন বেজে যেত। ফোন কেটেও দিতেন তিনি। পরে জানাতেন, শাশুড়ি পাশে থাকায় ফোন ধরতে পারেননি।
পুলিশ জানায়, মৃতার বাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোট মিলেছে। সেটিতে লেখা, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’’ সুজাতার জামাইবাবুর দাবি, ‘‘ওই নোটের হাতের লেখা সুজাতার নয়। এটা থেকেই পরিষ্কার, ওকে পরিকল্পনা করে মেরে ফেলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করুক।’’ এই ঘটনায় সুজাতার শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও তাঁকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। বুধবার দুপুরে সুজাতার শ্বশুরবাড়ি গিয়ে তাঁর শ্বাশুড়ি মঞ্জু সমাদ্দারকে দেখা গেল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বৌমা কেন আত্মহত্যা করল, কিছুই বুঝতে পারছি না। ওর পরিবারের তরফে আমাদের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ করা হয়েছে, তা মিথ্যা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy