Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Death

Death: হাসপাতালের আটতলা থেকে পড়ে মৃত্যু মিস্ত্রির

লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ দশতলা হাসপাতাল ভবনের আটতলায় কাজ করছিলেন অধীর।

অঘটন: হাসপাতালের এই অংশে কাজ করার সময়েই পড়ে যান অধীর। সোমবার।

অঘটন: হাসপাতালের এই অংশে কাজ করার সময়েই পড়ে যান অধীর। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৩৩
Share: Save:

কাজ করতে গিয়ে ফের বহুতল থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে শেক্সপিয়র সরণি থানার মিন্টো পার্ক এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন ওই হাসপাতালের আটতলায় রঙের কাজ করছিলেন অধীর হাওলাদার (৩৬) নামে এক যুবক। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে থাকতেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই শ্রমিকের কোমরের দড়ির বাঁধন আলগা হয়েই যাওয়ার ফলেই সম্ভবত দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ দিন এই ঘটনার পরে ফের প্রশ্ন উঠেছে, বহুতলে কাজ করার সময়ে এক জন শ্রমিকের নিরাপত্তার যা যা সরঞ্জাম থাকা দরকার, এ ক্ষেত্রে তা কি আদৌ ছিল?

লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ দশতলা হাসপাতাল ভবনের আটতলায় কাজ করছিলেন অধীর। ভারা বেঁধেই চলছিল রং করার কাজ। সেই সময়েই হঠাৎ চক্ষু বিভাগের পিছন দিকের একটি জায়গায় পড়ে যান তিনি। প্রাথমিক ভাবে ওই হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসার চেষ্টা হয়। পরে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে ওই শ্রমিককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

দিনকয়েক আগে শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকাতেই একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির উপর থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল এক শ্রমিকের। এ দিনের ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, অধীর পড়ে গিয়েছেন পা পিছলে কিংবা দড়ি ছিঁড়ে। ভারা অটুট ছিল। যদিও ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে বলে লালবাজার জানিয়েছে। ঘটনার পরে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অধীরের পরিবারকেও খবর পাঠানো হয়েছে। তবে ঠিকাদার সংস্থা কর্মরত ওই শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা কী কী ব্যবস্থা রেখেছিল, তার তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের এক কর্তা।

এ দিনের দুর্ঘটনার পরে ওই বেসরকারি হাসপাতালের সিইও প্রদীপ টন্ডন জানান, সুরক্ষা ব্যবস্থা ঠিকঠাকই ছিল। সম্ভবত ওই শ্রমিক ঠিকমতো নিজেকে বাঁধেননি। তাই তিনি পড়ে গিয়েছেন।

বহুতলে শ্রমিকদের কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, এক জন শ্রমিক কী কী ধরনের রোগে ভুগছেন, বিশেষত মাথা ঘোরা কিংবা উচ্চ রক্তচাপের মতো কোনও রোগ তাঁর রয়েছে কি না, সে দিকে খেয়াল রাখা। নিজেকে বাঁধার জন্য সেই শ্রমিকের কোমরে দড়ি, মাথায় হেলমেট, পরনে গ্লোসাইন জ্যাকেট ও পা-ঢাকা জুতো থাকাটাও আবশ্যিক। নির্মাণস্থলে অক্সিজেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখাটাও বাধ্যতামূলক। স্থানীয় থানাতেও কর্মরত শ্রমিকদের নাম-ঠিকানা জানিয়ে রাখার কথা ঠিকাদার সংস্থার।

বছর দুয়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি জায়গায় জলাধারের নির্মাণকাজ চলার সময়ে ভারা ভেঙে নীচে পড়ে যান এক শ্রমিক। এক জনের উপরে তিনি পড়েছিলেন। প্রথম জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। দ্বিতীয় জন প্রায় পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক কালে এন্টালি থানা এলাকাতেও উপর থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল নির্মাণস্থলে কর্মরত এক নাবালকের। কী ভাবে তাকে কাজে লাগানো হয়েছিল, উঠেছিল সেই প্রশ্নও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Private hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE