E-Paper

স্ত্রীকে খুন করার পরে দু’পা কেটে দেহ পুঁতে দিল স্বামী

পেশায় রাজমিস্ত্রি আলিম আদতে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। গত ১৫ বছর ধরে সে পৈলানের ছিটবাগি গ্রামে বাস করছে। বছর দশেক আগে মমতাজকে বিয়ে করে আলিম। মমতাজ তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৩ ০৬:৫৩
A Photograph representing a dead body

বুধবার বিকেলে এলাকারই একটি পুকুরের ধার থেকে মমতাজের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  প্রতীকী ছবি।

ইট দিয়ে স্ত্রীর মাথা থেঁতলে খুন করে তাঁর দু’পা কেটে মাটিতে দেহ পুঁতে দেওয়ার অভিযোগে স্বামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে বিষ্ণুপুর থানার পৈলানের কোণচৌকি এলাকায়। মৃতার নাম মমতাজ বেগম (৪০)। তাঁকে খুনের অভিযোগে স্বামী আলিম আলিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে এলাকারই একটি পুকুরের ধার থেকে মমতাজের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় রাজমিস্ত্রি আলিম আদতে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। গত ১৫ বছর ধরে সে পৈলানের ছিটবাগি গ্রামে বাস করছে। বছর দশেক আগে মমতাজকে বিয়ে করে আলিম। মমতাজ তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদে থাকেন আলিমের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তানেরা। মমতাজ ঠাকুরপুকুরের একটি ছোট কারখানায় কাজ করতেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, স্ত্রীকে সব সময়ে সন্দেহ করত আলিম। মমতাজ যত ক্ষণ কারখানায় কাজ করতেন, সেই সময়ে মাঝেমধ্যেই ভিডিয়ো কল করে তাঁর উপরে নজর রাখত সে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে পুলিশ জেনেছে, প্রতিদিন কারখানায় কাজের শেষে মমতাজকে বাড়ি নিয়ে আসত আলিম। বুধবার রাতে বাড়ি ফিরে সে জানায়, তাঁদের দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হওয়ায় মমতাজ বাড়ি আসেনি। সে কথায় সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তাঁরা মমতাজের খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু তাঁর সন্ধান মেলেনি। শেষে বুধবার বিষ্ণুপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। ওই থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি দল ঠাকুরপুকুরের সেই কারখানা এবং আশপাশের এলাকায় আলিমকে নিয়ে মমতাজের খোঁজ করতে থাকে। তাঁর মোবাইলের টাওয়ারের অবস্থানও পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায়, মোবাইলের সর্বশেষ অবস্থান দেখাচ্ছে আলিমের বাড়ি। তখন তদন্তকারীরা নিশ্চিত হন, মোবাইলটি রয়েছে আলিমের বাড়িতেই।

এর পরেই আলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। টানা জেরায় সে জানায়, কারখানা থেকে স্ত্রীকে নিয়ে আসার পথে একটি ফাঁকা জায়গায় তাকে সাইকেল চালানো শেখাত সে। সেই অছিলাতেই তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল। আলিমের এই বয়ানের পরে ওই এলাকার সমস্ত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। একটি ফুটেজে দেখা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে স্ত্রীকে নিয়ে আলিম একটি ফাঁকা মাঠের দিকে যাচ্ছে। আধ ঘণ্টা পরে সে একা বেরিয়ে আসছে। পুলিশ জেনেছে, ওই মাঠের পাশে একটি বাড়িতে আলিমের সাইকেল রাখা থাকত। সেই বাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তাঁরা পুলিশকে জানান, বুধবার আলিম সাইকেল নিতে আসেনি। এতেই তার উপরে পুলিশের সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়।

জেরায় আলিম জানিয়েছে, ইট দিয়ে স্ত্রীর মাথায় একাধিক আঘাত করেছিল সে। পরে ফাঁকা মাঠের পাশে ঝোপে তাঁর দেহ রেখে আসে। গভীর রাতে গিয়ে করাত দিয়ে মমতাজের দুটো পা কাটে সে। এর পরে পুকুরপাড়ে মাটি কেটে স্ত্রীর দেহ চাপা দিয়ে দেয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Crime Murder police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy