ধানকলে কাজ করার সময়ে আচমকাই যন্ত্রে হাত ঢুকে গিয়েছিল। তাতে তিনটি আঙুল প্রায় পুরোটা এবং একটি আঙুলের কিছুটা অংশ কেটে পড়ে গিয়েছিল মাটিতে। এর পরেই স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঠিক পদ্ধতিতে ওই কাটা আঙুল সংরক্ষণ করে শহরে নিয়ে আসা হয় কিশোরকে। প্রায় আট ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে পুনঃস্থাপন করা হল ১৬ বছরের সেই কিশোরের সব আঙুল।
জানা যাচ্ছে, গত ১০ জুলাই সকালে বর্ধমানের দাঁইহাটের বাসিন্দা, সুরজিৎ ঘোষ নামে ওই কিশোর ধানকলে কাজ করছিল। আচমকাই ধান কাটার যন্ত্রে হাত ঢুকে যায় তার। মুহূর্তের মধ্যে ডান হাতের তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা— এই তিনটি আঙুলের প্রায় পুরোটা কেটে যায়। বুড়ো আঙুলের নখের অংশও কেটে পড়ে যায়। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি জানান, কলকাতায় নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচারে আঙুল জোড়া লাগানো সম্ভব। এর পরেই সিএমআরআই হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জন অনুপম গোলাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সুরজিতের পরিজনেরা।
অনুপম বলেন, ‘‘আঙুলগুলি কী ভাবে আনতে হবে, সেই বিষয়টি বুঝিয়ে বলি। এ-ও বলি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেন রোগীকে নিয়ে আসা হয়।’’ সেই মতো ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে আলিপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে সুরজিৎকে নিয়ে আসেন পরিজনেরা। তাকে পরীক্ষা করে তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচারের বন্দোবস্ত করা হয়। অনুপম-সহ অন্য চিকিৎসকদের দল অস্ত্রোপচারটি করে। ওই শল্য চিকিৎসক জানাচ্ছেন, কিশোরের তিনটি আঙুল খুবই খারাপ ভাবে কেটেছিল। চুলের মতো সরু শিরা, ধমনী, স্নায়ুগুলিকে মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে দেখে জোড়া হয়। পাশাপাশি, টেন্ডনও জোড়া লাগানো হয়। তাতে তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকার প্রায় পুরোটা এবং বুড়ো আঙুলের উপরের অংশ পুনরায় জোড়া লাগানো সম্ভব হয়।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখন ধীরে ধীরে আঙুল নাড়তে পারছে সুরজিৎ। তবে অনুভূতি ফিরতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে। অনুপম বলেন, ‘‘আগের মতো পুরোপুরি না হলেও, আবারও ওই আঙুলের মাধ্যমে স্বাভাবিক কাজ করতে পারবে ওই কিশোর।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)