এসএসকেএম থেকে নিখোঁজ চিকিৎসাধীন রোগী। ফাইল চিত্র।
ন্যাশনাল মেডিক্যালের পরে এ বার এসএসকেএম থেকে নিখোঁজ চিকিৎসাধীন রোগী। গত সোমবারের ওই ঘটনার পরে চার দিন কেটে গেলেও এখনও খোঁজ মেলেনি প্রৌঢ় সেই রোগীর। তবে এসএসকেএমের মতো রাজ্যের প্রথম সারির হাসপাতালে ভর্তির পরে কী ভাবে এক জন রোগী বেরিয়ে গেলেন এবং তা নিরাপত্তারক্ষীরা টের পেলেন না কেন— সেই প্রশ্ন তুলছেন রোগীর পরিজনেরা।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহ তিনেক আগে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগী উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনার পরের দিন হাসপাতাল চত্বর থেকেই উদ্ধার হয় ওই রোগিণীর দেহ। তার রেশ কাটতে না কাটতেই শহরের আরও একটি সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটল। এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েই ফের বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে।
রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৯ নভেম্বর এসএসকেএমে ভর্তি হন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা, বছর আটান্নের বিশ্বনাথ রায়। এসএসকেএমের কার্জন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন তিনি। বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার পরে তাঁর হার্নিয়ার অস্ত্রোপচার করা হবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। যদিও সোমবার বিকেলের পর থেকে রোগীর খোঁজ মিলছে না বলে অভিযোগ। রোগীর এক আত্মীয় তারকনাথ দাস বলেন, ‘‘বিকেলে রোগীর সঙ্গে সাক্ষাতের নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে দেখি, উনি নেই। ওয়ার্ডের নিরাপত্তারক্ষীরাও এ নিয়ে কিছু বলতে পারেননি।’’
ঘটনার কথা জানাজানি হতেই হাসপাতালকে জানানোর পাশাপাশি পরিবারের তরফে প্রথমে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। এর পরে গত মঙ্গলবার ভবানীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের লোকজন। বৃহস্পতিবার পরিবারের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও লিখিত আকারে গোটা ঘটনার কথা ফের জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিখোঁজ রোগীর পরিবারের সদস্যেরা।
তবে ঘটনার পরের দিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও পর্যন্ত রোগীর কোনও খোঁজ না মেলায় পুলিশি তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও পুলিশের দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে যে, দুপুর ২টো ৪৮ মিনিট নাগাদ ওই রোগী বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তবে এর পরে তিনি কোন পথে হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছেন, তার হদিস মেলেনি বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
যদিও পরিবারের তরফে দাবি, ঘটনার পরের দিন, অর্থাৎ মঙ্গলবার নিখোঁজ রোগীর মোবাইলের অবস্থান ছিল দমদম পার্কের কাছে। সে কথা পুলিশকে জানানোও হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বিশ্বনাথের এক আত্মীয় বলেন, ‘‘প্রথমে বিষয়টি নিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপই করেনি পুলিশ। আমাদের ফোন নম্বর নিয়ে কোনও খবর পেলে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেই দায় সেরেছিল।’’
এসএসকেএমের এক কর্তা বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাঁরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যদি কোনও গাফিলতি প্রমাণিত হয়, তা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy