E-Paper

সময়ে ফ্ল্যাট নয়, প্রোমোটারের জেল ক্রেতা সুরক্ষা কোর্টে

ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, বেলেঘাটার বাসিন্দা, অভিযুক্ত প্রোমোটার ভোলানাথ সমাদ্দারকে মঙ্গলবারই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:২৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

ক্রেতাকে সময় মতো ফ্ল্যাট না দেওয়ায় প্রোমোটারকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করায় অভিযুক্ত প্রোমোটারের বিরুদ্ধে জারি মামলা (এগজিকিউশন কেস) রুজু হয়। প্রোমোটারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ, অসন্তুষ্ট বিচারপতি বুধবার তাঁকে দু’বছরের কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিচারপতির নির্দেশ, ওই প্রোমোটারকে জরিমানা বাবদ আট হাজার টাকা জমা দিতে হবে। সময় মতো জরিমানার টাকা না দিলে আরও আট মাস তাঁকে জেলে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।

ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, বেলেঘাটার বাসিন্দা, অভিযুক্ত প্রোমোটার ভোলানাথ সমাদ্দারকে মঙ্গলবারই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, হাওড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত সাউ ও দেবাশিস রঞ্জন জানা ২০১২ সালে চিংড়িঘাটায় দু’টি ফ্ল্যাট কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। দু’জনে মিলে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা দিয়েও সময় মতো ফ্ল্যাট না পাওয়ায় ২০১৫ সাল নাগাদ ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা রুজু করেন। ২০১৯ সালে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত প্রোমোটারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী বরুণ প্রসাদের অভিযোগ, ‘‘আদালতের নির্দেশের পরেও কর্ণপাত করেননি ওই প্রোমোটার। পাঁচ বছরের মধ্যে দুই উপভোক্তা প্রশান্ত ও দেবাশিস পেয়েছিলেন মাত্র ৩ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা। বাধ্য হয়ে অভিযুক্ত প্রোমোটারের বিরুদ্ধে জারি মামলা রুজু করা হয়।’’

মঙ্গলবার সেই মামলার চূড়ান্ত শুনানি হয়। রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত সূত্রের খবর, শুনানিতে হাজির ছিলেন অভিযুক্ত প্রোমোটার ভোলানাথ। বিচারপতি মনোজিৎ সমাদ্দার তাঁর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনি তো দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। আপনাকে ছেড়ে দিতে পারি না। আপনার বক্তব্য শুনতে চাই।’’ উত্তরে ভোলানাথ জানান, ‘‘আমি একসঙ্গে মোটা টাকা দিতে পারব না। ধাপে ধাপে দেব।’’ মামলাকারীদের আইনজীবীর অভিযোগ, ‘‘আগে বিভিন্ন দিনের শুনানিতে ওই প্রোমোটার একই কথা বললেও আদালতের নির্দেশ মতো ক্ষতিপূরণের টাকা জমা দিতে পারেননি। যার জন্য রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারপতি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রোমোটারকে দু’বছরের জন্য জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’’

এই রায় প্রসঙ্গে প্রোমোটারের আইনজীবী হিরণ্ময় ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘আমার মক্কেলের হয়ে অনেক লড়েছিলাম। বিচারপতি রায় দিয়েছেন। আইন আইনের পথে চলবে।’’ আইনজীবী বরুণের পর্যবেক্ষণ, ‘‘সাধারণ মানুষ ফ্ল্যাট কিনে অনেক ক্ষেত্রে প্রতারিত হন। আদালতের এই রায় সাধারণ মানুষের মনে যেমন সাহস জোগাবে, তেমনই ‘প্রোমোটার-রাজ’ও কমাবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Consumer Protection Act

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy