Advertisement
E-Paper

ধান ফলানোর আশায় ভাঙা হয়নি পুজোমণ্ডপ

বহুতল ঘেরা মাঠে এখনও ‘ধানি জমি’তে ফলনের প্রতীক্ষায় পুজো উদ্যোক্তারা।

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫২
বিতর্ক: কংক্রিটের জঙ্গলের মাঝে ধানি জমি। নিজস্ব চিত্র

বিতর্ক: কংক্রিটের জঙ্গলের মাঝে ধানি জমি। নিজস্ব চিত্র

শহর কলকাতায় এক খণ্ড গ্রাম। পুজোর থিম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল। তবে এক মাসের বেশি পেরিয়ে গিয়েও সেই গ্রাম রয়ে গিয়েছে দক্ষিণ কলকাতার সুইন হো লেনে!

বহুতল ঘেরা মাঠে এখনও ‘ধানি জমি’তে ফলনের প্রতীক্ষায় পুজো উদ্যোক্তারা। তাঁরা বলছেন, ‘‘১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করব। শিস এসেছে তো, ঠিক ধান হবে।’’ এ দিকে উদ্যোক্তাদের এই ভাবনায় বিরক্ত বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘পুজোর এত দিন পরেও ধান চাষের নামে ওই জঙ্গল রেখে দিয়েছে। মশার জ্বালায় আশপাশের বাসিন্দারা টিকতে পারছেন না। চার দিকে যেখানে এত মশাবাহিত রোগের আতঙ্ক!’’ অন্য বাসিন্দার প্রশ্ন, ‘‘এটাই পাড়ার এক মাত্র মাঠ। তা-ও এ ভাবে দখল করে রাখলে বয়স্করা যাবেন কোথায়? বাচ্চারাই বা কোথায় খেলবে?’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন পুজোর উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি, ‘‘প্রতিদিন জল দেওয়া হয়। এলাকাও পরিষ্কার রাখি। কয়েক জন ছাড়া পাড়ার বেশির ভাগ লোকই এই উদ্যোগে উৎসাহী।’’

১৯৯৮ সাল থেকে পুজো করছে কসবার ‘খেয়ালি সঙ্ঘ’। এ বার তাদের থিম ছিল, ‘মাটির কুটিরে খড়ের প্রতিমা’। সেই জন্য মাঠে রীতিমতো জমি চাষ করে ধানের চারা পুঁতেছিলেন উদ্যোক্তারা। মাঠের এক দিক কেটে করা হয়েছিল পুকুর। তাতে মাছ এবং কাঁকড়াও ছাড়া হয়। লাউ, কুমড়ো, ফুলকপি, পুঁইশাকের বাগান হয়েছিল মণ্ডপের প্রবেশদ্বারে। ছিল খড়ের তৈরি প্রতিমা। পুজো শেষে সেই প্রতিমা বিসর্জন হলেও বাকিটা ধরে রাখা আছে এখনও।

এক দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, মাঠজুড়ে ধানগাছের সারি। তার দু’পাশ দিয়ে মণ্ডপে ঢোকার এবং বেরোনোর পথ। মণ্ডপের সামনের পুকুরে জল থাকলেও তা খড় দিয়ে ঢাকা। ধান পাহারায় রয়েছে ‘কাকতাড়ুয়া’! পুজো উদ্যোক্তা সৌরভ দাস বলেন, ‘‘সব রেখে দিয়েছি, শুধু ধান দেখব বলে।’’ সৌরভ জানান, অগস্ট থেকে থিম নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল তাঁদের। অক্টোবরে বাকি আনাজ ফললেও, ধানে শিস ধরেনি। তাই ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। আরেক উদ্যোক্তা মার্ক অ্যান্টনি বিশ্বাস বলেন, ‘‘থিম মেকার বলেছেন, ডিসেম্বরে ধান হবে। তবে সেই ধানের চাল খাওয়া যাবে কি না জানি না!’’

এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। কাউন্সিলর বিজনলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উদ্যোগটা খারাপ নয়। আমি নিজেও নজর রাখছি। এমনি পরিষ্কারই রয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেখাই যাক না, ধান হয় কি না!’’ কৃষি বিজ্ঞানী কৌশিক ব্রহ্মচারী বলছেন, ‘‘ওখানে ধান ফলতেই পারে। সাধারণত বীজ বপন করা থেকে ধান হওয়া পর্যন্ত গড়ে ১১০ থেকে ১১৫ দিন সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে সেই সময় দেওয়া হলে ধান হবে।’’

Swinhoe Lane Durga Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy