প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ

মোবাইলে কুরুচিকর ছবি ও প্রস্তাব পাঠানোর অভিযোগ তুলে নিজের প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে ব্যাডমিন্টনে প্রতিনিধিত্ব করা এক ছাত্রী। যার জেরে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে অভিযুক্ত সেই ব্যক্তিকে।

ঘটনার সূত্রপাত এ দিন সকালে। ওই ছাত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় মোবাইলের স্ক্রিনশট-সহ একটি দীর্ঘ পোস্ট করে জানান, বহুদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাডমিন্টন প্রশিক্ষক তাঁকে উত্ত্যক্ত করছেন। অভিযোগকারিণীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পূর্বাঞ্চলের আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য নির্বাচিত হয়েছি এ বার। গত এক বছর ধরে ওই কোচ বিরক্ত করছিলেন আমাকে। অশালীন প্রস্তাবের সঙ্গে অশ্লীল ছবিও পাঠাতেন। রাতেও ফোন করে কুরুচিকর কথাবার্তা বলতেন।’’ ওই ছাত্রীর কথায়, ‘‘প্রমাণ-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বোর্ডে বিষয়টি জানিয়েছিলাম এক বছর আগে। এমনকি, দু’সপ্তাহ আগেও ফের জানিয়েছিলাম কোচের কীর্তিকলাপের কথা। কিন্তু ওঁরা বলেন, নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নিতে। তাই বাধ্য হয়েছি সোশ্যাল মিডিয়ায় সব জানাতে।’’

এ দিন দুপুরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান। তার পরে উপাচার্যের ঘরের সামনে গিয়েও প্রতিবাদ জানান তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবার উপাচার্য অভিযোগকারিণীর বক্তব্য শুনবেন। ওই ছাত্রী ও তাঁর সহপাঠীদের বক্তব্য, ‘‘উপাচার্যকে লিখিত ভাবে সব জানিয়েছি। যদি সুবিচার না পাই, তা হলে প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘অভিযোগ শুনেছি। ছাত্রছাত্রীদের লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি আংশিক সময়ের প্রশিক্ষক ছিলেন। তাঁকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে।’’

যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই প্রশিক্ষক আবার প্রাক্তন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওই মেয়েটি আগের বছর দলে সুযোগ না পাওয়ায় আমাকে হুমকি দিয়েছিল। সামনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোট। তার জন্য আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। সব অভিযোগ মিথ্যা।’’

রাজ্য ব্যাডমিন্টন সংস্থার সচিব শেখর বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ আমরা এখনও কোনও অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ এলে ওই প্রশিক্ষককে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সম্মুখীন হতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি রাজ্যের প্রাক্তন ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। রাজ্য সংস্থার সঙ্গেও জড়িত। তবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে আমাদের সংস্থা জড়িত নয় কোনও ভাবেই।’’