E-Paper

নতুন নামে শংসাপত্র চেয়ে মন্ত্রীর দ্বারস্থ রূপান্তরিত শিক্ষিকা

পিএইচ ডি-র প্রভিশনাল শংসাপত্রে নাম দেবজ্যোতির পরিবর্তে দেবাঞ্জলি করার আবেদন জানিয়ে ওই শিক্ষিকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছিলেন গত ৯ ডিসেম্বর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৩ ০৭:১০
Bratya Basu

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দ্বারস্থ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তরিত শিক্ষিকা। ফাইল চিত্র।

ছিলেন দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য। শরীরে নারী অভিব্যক্তির প্রকাশ হলে ‘সেক্স রিঅ্যাসাইনমেন্ট সার্জারি’ করিয়ে হয়েছেন দেবাঞ্জলি। গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজের শিক্ষিকা দেবাঞ্জলি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি করেছেন মানবদেহে মোবাইলফোনের তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব নিয়ে। কিন্তু তাঁকে পিএইচ ডি-র শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে পুরনো নামে। দেবাঞ্জলির অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিক বার আবেদন করলেও শংসাপত্রে তাঁর নাম পরিবর্তন করা হয়নি। অগত্যা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে নতুন নামে শংসাপত্র দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ওই কলেজ-শিক্ষিকা। দেবাঞ্জলির প্রশ্ন, তবে কি নারীসত্তার কোনও মূল্য নেই? কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টিকে এ ভাবে দেখছেন না। তাঁদের দাবি, স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় পদ্ধতিগত কিছু সমস্যা রয়েছে। শংসাপত্রে নাম পরিবর্তন করতে হলে সেনেটের অনুমোদন প্রয়োজন।

গার্ডেনরিচের বাসিন্দা দেবাঞ্জলি ২০১৮-এ রূপান্তরকামী পরীক্ষার্থী পরিচয়ে ‘স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট’ (সেট)-এ উত্তীর্ণ হয়েছেন। শারীরবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ওই শিক্ষিকা গত মাসে শিক্ষামন্ত্রীকে দেওয়া আবেদনপত্রে লিখেছেন, পিএইচ ডি-র রেজিস্ট্রেশনে তাঁর নাম রয়েছে দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য। রূপান্তরকামী হওয়ায় তিনি ২০২১-র ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘সেক্স রিঅ্যাসাইনমেন্ট সার্জারির’ মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করেন। সেই সংক্রান্ত হলফনামাও রয়েছে তাঁর।

পিএইচ ডি-র প্রভিশনাল শংসাপত্রে নাম দেবজ্যোতির পরিবর্তে দেবাঞ্জলি করার আবেদন জানিয়ে ওই শিক্ষিকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছিলেন গত ৯ ডিসেম্বর। তা সত্ত্বেও তাঁকে প্রভিশনাল শংসাপত্র দেওয়া হয়েছিল পুরনো নামেই। এর পরে তিনি দ্বিতীয় বার শংসাপত্রে নাম পরিবর্তনের আবেদন জানান গত ২৩ ডিসেম্বর। কিন্তু তাঁকে চূড়ান্ত শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে দেবজ্যোতি নামেই।

দেবাঞ্জলি বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষার স্বার্থে পিএইচ ডি-র শংসাপত্রে নাম পরিবর্তন আবশ্যক। আমার সরকারি সমস্ত পরিচয়পত্রে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডারপ্রোটেকশন অ্যাক্ট-এ সরকারের দেওয়া স্বীকৃতিপত্র রয়েছে আমার। সে সব নথি বিশ্ববিদ্যালয়ে জমাও দিয়েছি। তা সত্ত্বেও পিএইচ ডি-র শংসাপত্রে নাম পরিবর্তনের আবেদন নিয়ে আমাকে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।’’

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার দেবারতি দাস জানান, কর্তৃপক্ষ দেবাঞ্জলির আবেদনপত্র পেয়েছেন। কিন্তু পদ্ধতিগত কিছু সমস্যার কারণে এখনও তাঁকে নতুন নামে শংসাপত্র দেওয়া যায়নি। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মুহূর্তে স্থায়ী উপাচার্য নেই। ফলে এমনিতেই কাজে নানা সমস্যা হচ্ছে। পরিবর্তিত নামে দেবাঞ্জলিকে শংসাপত্র দিতে হলে তাঁর শিক্ষাগত সব শংসাপত্রে নাম পরিবর্তন করাতে হবে। তা না হলে, তাঁকে নতুন নামে শংসাপত্র দিতে হলে সেনেটের অনুমোদন দরকার।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bratya Basu University of Calcutta

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy