স্বামী অনুপম সরকার এবং মেয়ের সঙ্গে অদিতি। —নিজস্ব চিত্র।
৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফের চিকিৎসায় গাফিলতিতে আরও একটি প্রাণহানির অভিযোগ উঠল কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। চিকিৎসার গাফিলতিতে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে ইএম বাইপাসের একটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আনন্দপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ব্যক্তি। বুধবারই চিকিৎসার গাফিলতিতে চার মাসের শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে কাঠগড়ায় উঠেছিল অ্যাপোলো। তার তিন দিনের মাথাতেই ফের এই ঘটনা।
গত ১ মার্চ ফর্টিস হাসপাতালে গলব্লাডারে স্টোন নিয়ে ভর্তি হন হাওড়ার মৌরীগ্রামের বাসিন্দা অদিতি ঘোষ সরকার (৩২)। তাঁর স্বামী অনুপম সরকার পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। ৩ মার্চ ওই হাসপাতালেই অদিতির অস্ত্রোপচার হয়। অনুপমবাবু জানান, অস্ত্রোপচারের দু’দিন পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে। চিকিৎসকেরা জানান যে, হিমোগ্লোবিন খুব কমে যাওয়ায় তিনি দুর্বল হয়ে পড়ছেন। কিন্তু কেন হিমোগ্লোবিন কমে যাচ্ছে তার কোনও সদুত্তর তাঁরা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ অনুপমবাবুর। কিছু একটা গন্ডগোল হচ্ছে অনুমান করে শুক্রবারই তিনি আনন্দপুর থানায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেন। আর ঠিক তার পর দিন, শনিবার হাসপাতালের তরফে তাঁকে জানানো হয় যে, অদিতি মারা গিয়েছেন। এর পর গাফিলতিতে অদিতির মৃত্যুর খবরটাও আনন্দপুর থানাকে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে আইএসআই-এর আশ্রয়ে রয়েছে জাওয়াহিরি, বলছে রিপোর্ট
এখানেই শেষ নয়। অনুপমবাবুর আরও অভিযোগ, ১ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকার প্যাকেজে অদিতিকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল তাঁকে ৩০ লক্ষ টাকার বিল ধরিয়ে দেয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এর মধ্যে কোথাও চিকিৎসার গাফিলতি রয়েছে বলে মানতে নারাজ। ফর্টিস হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, শুধু গলব্লাডারে স্টোনই নয়, অদিতির একাধিক সমস্যা ছিল। সেগুলোর জন্যই অদিতি মারা যান। আর সেই সমস্ত রোগের চিকিৎসা করাতে গিয়েই খরচ এতটা বেড়ে গিয়েছে। অভিযোগ পেলে অনুপমবাবুকে ঠিক কী হয়েছিল তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
সম্প্রতি সিএমআরআই-তে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে ভাঙচুরের পরে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপ করেন। রাজ্যের সমস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে রোগীর পরিবারের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার নির্দেশ দেন। রোগীর পরিবারের সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশেষ স্বাস্থ্য কমিশনও গড়ে দেন। তা সত্ত্বেও বারবার এই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে হাসপাতালগুলির ভূমিকা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy