Advertisement
E-Paper

ভিন্ন ব্যবস্থা নয়, অন্তর্ভুক্তিতেই মঙ্গল বিশেষ শিশুদের

সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এমনই নানা সমস্যা নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে আলোচনা চলল ল্যান্সডাউনের পেডিকন হলে।

দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৫
representational image

—প্রতীকী ছবি।

চুপটি করে সতীর্থদের সঙ্গে বসে আছে এক পড়ুয়া। কিন্তু নজর জানলার বাইরে। আদৌ কি পড়া শুনছে সে! বোঝা যাবে কী করে? সরকারি স্কুলে প্রাথমিকের গণ্ডি তো পেরিয়েছে। কিন্তু উঁচু ক্লাসে উঠতেই দেখা যায়, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনও পড়ুয়া সাধারণ যোগ-বিয়োগ করতে পারছে না। তখন উপায়? এ ছাড়া, বেশির ভাগ সময়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনও কোনও পড়ুয়াকে ক্লাসে বসাতেই হিমশিম খেতে হয়। অভিভাবককে জানিয়েও লাভ হয় না সব সময়ে। তখনই বা কী করণীয়?

সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এমনই নানা সমস্যা নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে আলোচনা চলল ল্যান্সডাউনের পেডিকন হলে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে আয়োজিত এক দিনের এই কর্মশালায় বিশেষ শিক্ষক এবং চিকিৎসকেরা হাতেকলমে দেখিয়ে দিলেন, কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দিয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদেরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। শিশুরোগ চিকিৎসক নন্দিতা চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘অনেক সময়েই দেখেছি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের সাধারণ স্কুল থেকে বার করে দেওয়া হয়। ফের তারা ভর্তি হয় বিশেষ স্কুলে। এই ধরনের প্রবণতা কমাতে শিক্ষকদের ঠিক মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। তাতে তাঁরাই সমস্যা অনেকটা মেটাতে পারবেন।’’ তা ছাড়াও তাঁর মতে, ক্লাসে কোনও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়ার থাকাটা অন্য বাচ্চাদের জন্যও প্রয়োজন। তারাও শিখবে, কী করে বিশেষ শিশুদের সঙ্গে নিয়ে চলতে হয়। ফলে ভবিষ্যতে এমন কোনও পরিস্থিতি দেখলে সহজেই তারা প্রয়োজনীয় সাহায্য করতে পারবে।

দক্ষিণ কলকাতার একটি সরকারি স্কুলের এক শিক্ষিকা বললেন, ‘‘ক্লাসে পড়াশোনায় ভাল পড়ুয়াটির দায়িত্ব, তার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সতীর্থের দিকে নজর রাখা। বোর্ড থেকে খাতায় কিছু লিখতে অসুবিধা হলেও তাকে সাহায্য করে ক্লাস মনিটর।’’ চিকিৎসকেরা জানান, এ ক্ষেত্রে শিশুটিকে সাহায্য করতে ‘শ্যাডো’ শিক্ষকদেরও সাহায্য নেওয়া যায়। এগিয়ে আসতে হবে বিশেষ শিক্ষককেও। কিন্তু এখানকার বেশির ভাগ সরকারি স্কুলেই এমন সুবিধা নেই। সে ক্ষেত্রে সাহায্য নিতে হবে অভিভাবকদের। প্রয়োজনে তাঁদেরই ‘শ্যাডো’ শিক্ষকের ভূমিকা পালন করতে হবে।

কিন্তু অনেক সময়েই দেখা যায়, অভিভাবকেরা শিশুটির সমস্যার কথা মানতেই চাইছেন না। সে ক্ষেত্রে উপায়? এই প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসক মৌসুমী মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘স্কুলে ডাক পড়লেই অভিভাবকেরা ভয় পান, তাঁদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। শিক্ষকেরাই পারেন, অভিভাবকদের সঙ্গে নমনীয় ভাবে কথা বলে বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে।’’ পাশাপাশি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়ার সামনে রেগে না গিয়ে, চিৎকার না করে, আগে তার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। চিকিৎসক মন্দিরা রায়ের কথায়, ‘‘শিক্ষকদের বুঝতে হবে, বাচ্চাটি ইচ্ছে করে কোনও কাজ করছে না। তার নিজেরও সমস্যা হচ্ছে। নানা প্রতিবন্ধকতায় সে কাউকে বোঝাতে পারছে না।’’

কিন্তু কোনও শিশুর অটিজ়ম, এডিএইচডি বা অন্য বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা আছে কি না, তার যথাযথ মূল্যায়ন ছাড়াই শিক্ষকেরা যেন চিহ্নিত না করে দেন। এতেও কিন্তু সমস্যা বাড়তে পারে। বরং প্রাথমিক সমস্যা চিহ্নিত করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Special Children
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy