নির্মীয়মাণ বাড়ির উপর থেকে লোহার রড পড়ে গেঁথে গেল ২১ বছরের এক যুবকের মাথায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল তাঁর। শুক্রবার রাতে এই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম মহম্মদ শামিম। তিনি পেশায় নির্মাণ ব্যবসায়ী।
শুক্রবার সন্ধ্যার পরে ওয়াটগঞ্জ থানার কবিতীর্থ সরণির পাথরগলিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম জাকির আলি (২১)। তিনি মোটরবাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে একটি বহুতলে নির্মাণকাজের জন্য লোহার রড তোলা হচ্ছিল। তার মধ্যে থেকেই একটি রড জাকিরের মাথার উপরে পড়ে গেঁথে যায়। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জাকিরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। স্থানীয় মানুষএলাকায় বেআইনি নির্মাণের রমরমা ব্যবসার অভিযোগ করতে থাকেন। ওয়াটগঞ্জ থানার অদূরেই এক যুবকের এ ভাবে কার্যত বেঘোরে মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়েরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের বিরাট বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ওয়াটগঞ্জথানা জানিয়েছে, যে মিস্ত্রিরা রড তুলছিলেন, তাঁরা পালিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের খোঁজ চলছে।
জাকিরের বাবা আশরাফ জানান, ছেলে জিম থেকে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে বেআইনি নির্মাণ ব্যবসারই শিকার হল। বেঘোরে মারা গেল ছেলেটা। প্রশাসনের চোখে পড়ে না।’’
এ দিন রাতে পাথরগলিতে গিয়ে দেখা যায়, সমান্তরাল ভাবে রয়েছে দু’টি বহুতল। মাঝে একচিলতে জায়গা। স্থানীয়েরা জানান, ওই গলির ভিতরে লোহার রড কেটে উপরে দড়ি বেঁধে তোলা হচ্ছিল। হুড়মুড়িয়ে সেই রড পড়ে যায় জাকিরেরমাথায়। তার মধ্যে একটি রড তাঁর মাথা ফুঁড়ে ঢুকে যায়। আহত অবস্থায় বাইক নিয়ে গলির মধ্যেই ছিটকে পড়েন জাকির। রডটিও টেনে মাথা থেকে বার করে ফেলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। যে বহুতলের নীচে জাকির পড়েছিলেন, সেটির উপরে তাঁদের একটি ঘরও রয়েছে।
এ দিকে, আরও রাতে স্থানীয় ৭৬ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি ষষ্ঠী দাসের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। কী ভাবে এলাকায় বেআইনি নির্মাণ রমরমিয়ে চলছে, তার জবাব চেয়ে সেখানে জমায়েত করেন তাঁরা। অবশ্য ষষ্ঠীবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ফোন ধরেননি তিনি। মেসেজের জবাবও দেননি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)