মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ছ’ঘণ্টার মধ্যে অপহৃত এক স্কুল শিক্ষিকাকে উদ্ধার করল পুলিশ। শুক্রবার সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ ওই শিক্ষিকাকে সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের একটি স্কুলের সামনে থেকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। দুপুর দেড়টা নাগাদ তাঁকে সোনারপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তিন জন।
পুলিশ জানায়, নন্দিতা ঘোষ (৫২) নামে ওই শিক্ষিকা মানিকতলার বাসিন্দা। তদন্তকারীরা জানান, সোনারপুরের এক কেব্ল টিভির ব্যবসায়ীর বোনকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লাখ দেড়েক টাকা নিয়েছিলেন নন্দিতাদেবী। সুদ-সহ ৮০ হাজার টাকা তিনি শোধ করেন। অভিযোগ, তার পরে আড়াই বছর ধরে ওই মহিলার সঙ্গে চাকরি ও বাকি টাকা ফেরত নিয়ে টালবাহানা করছিলেন।
পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে স্কুলে এসে অভিভাবকেরা দেখেন, নন্দিতাদেবীকে জোর করে একটি গাড়িতে তুলছেন জনা চারেক ব্যক্তি। স্কুল কর্তৃপক্ষকে তাঁরাই সব জানান। ওই স্কুলের তরফে সকাল ১০টা নাগাদ টালিগঞ্জ থানায় নন্দিতাদেবীকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পুলিশ তদন্তে নেমে নন্দিতাদেবীর মোবাইলে ফোন করে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন চিহ্নিত করে তদন্তকারীরা দেখেন, নন্দিতাদেবী রয়েছেন সোনারপুরের কাছে। টালিগঞ্জ থানার তদন্তকারীরা যোগাযোগ করেন সোনারপুর থানার সঙ্গে। দুই থানার পুলিশ গিয়ে সোনারপুরের একটি বাড়ি থেকে নন্দিতাদেবীকে উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, নন্দিতাদেবীকে স্কুলের সামনে থেকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই কেব্ল ব্যবসায়ী, তাঁর বোন, স্ত্রী ও গাড়ির চালক। ওই ব্যবসায়ী অমিত পালের বোন অর্পিতা কোলে, স্ত্রী তনুশ্রী পাল ও গাড়িচালক প্রসেনজিৎ রায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নন্দিতাদেবীর সহকর্মী, পরিজন ও পড়শিদের থেকে পুলিশ জেনেছে, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তি ও ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ না করার অভিযোগ রয়েছে। এই কাজে অনেক ক্ষেত্রে নন্দিতাদেবী স্কুলের নাম ব্যবহার ও প্রধান শিক্ষিকার স্বাক্ষরও জাল করেছিলেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দা প্রধান বিশাল গর্গ বলেন, ‘‘নন্দিতাদেবীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠলেও লিখিত অভিযোগ এর আগে জমা পড়েনি। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয়নি।’’ ধৃতদের জেরা করে পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে সবিস্তার জানার চেষ্টা করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy