দিনের পর দিন এক স্থানীয় প্রোমোটার ও তাঁর শাগরেদরা বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিচ্ছিলেন। মিলছিল খুনের হুমকিও। থানায় তা নিয়ে লিখিত অভিযোগও জানান বেহালার বাসিন্দা রুমা সাহা। থানায় দাখিল করা অভিযোগপত্রে দুষ্কৃতীদের নাম নির্দিষ্ট করে রুমাদেবী জানান, দুষ্কৃতীরা তাঁর ঘরে ঢুকে হুমকি দিয়েছে। নাবালিকা মেয়ের শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করেছে। এমনকী প্রাণভয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয়ও নেন রুমাদেবী।
কিন্তু সম্প্রতি আদালতে পেশ করা বেহালা থানার পুলিশের চার্জশিট দেখে হতবাক রুমাদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘চার্জশিটে শুধু প্রোমোটারের নাম ও অন্য ‘কয়েক জন’ হিসেবে লেখা ছিল। দুষ্কৃতীদের কারও নাম তাতে দেওয়া হয়নি। উল্টে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয় এক অভিযুক্তের স্ত্রীকেই!’’ রুমাদেবীর অভিযোগ, তা নিয়ে তদন্তকারী অফিসারকে প্রশ্ন করলে জবাব মেলে, ‘‘তদন্তে ওই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মেলেনি। তাই কারও নাম দেওয়া হয়নি। আপনি চাইলে আদালতে গিয়ে নিজের কথা
জানাতে পারেন।’’
বেহালার ১২০ নম্বর ওয়ার্ডের ওই ঘটনায় স্থানীয় থানার পুলিশের ভূমিকার প্রশ্ন তুলে এ বার তাই খোদ কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ-পশ্চিম ডিভিশনের অফিসার মিরাজ খালিদের দ্বারস্থ হলেন রুমাদেবী।
কী রয়েছে ডিসি-র কাছে দাখিল করা সেই অভিযোগে? তাতে রুমাদেবী জানিয়েছেন, ২০১৪-এর এপ্রিল মাসে বেহালা থানা এলাকার ৬ নম্বর নালাপুকুর লেনে তাঁর বা়ড়িতে স্থানীয় প্রোমোটার দেবাশিস ভৌমিক হাজির হন। সঙ্গে ছিল ভাস্কর সেন ও স্থানীয় কয়েক জন দুষ্কৃতী। সেই সময়ে তিনি ও তাঁর স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। সেই সুযোগে দেবাশিস ও ভাস্কর তাঁদের নাবালিকা মেয়েকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে পরের দিনই বেহালা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন রুমাদেবী। তখন পুলিশ ভাস্কর-সহ তিন জনকে গ্রেফতারও করেছিল। রুমাদেবীর দাবি, বিভিন্ন মহল থেকে তাঁর উপর ওই মামলা প্রত্যাহার করার চাপ দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে তিনি মামলা তুলে নেন।
কে এই ভাস্কর সেন? পুলিশ সূত্রে খবর, ভাস্করের বিরুদ্ধে আগেও অপরাধমূলক কয়েকটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া ভোটের আগে স্থানীয় সিপিএম নেতা অরিন্দম ঝা-এর বাড়িতে হামলার ঘটনাতেও ভাস্কর ও তাঁর দলবলের নাম উঠে এসেছিল।
রুমাদেবীর আরও অভিযোগ, ওই ঘটনার পর থেকেই অত্যাচার চরমে ওঠে। ভয় দেখানোর জন্য প্রায়ই রাতে বাড়ি লক্ষ করে ইট ছোড়া হতো। মিলত প্রাণনাশের হুমকিও। প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়েই রুমাদেবী ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যান।
এ প্রসঙ্গে ডিসি (এসডব্লিউডি) মিরাজ খালিদ জানান, তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন কী করে এ রকম ঘটল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy