দোকান তৈরি হচ্ছে স্কাইওয়াকের মাঝখানে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
দক্ষিণেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের স্কাইওয়াক প্রকল্পের কাজ শুরু করতে গিয়ে স্থানীয় দোকানদারদের প্রবল বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল প্রশাসনকে। দাবি উঠেছিল, কোনও ভাবেই দোকান উচ্ছেদ করা চলবে না। অনেক টালবাহানার পরে শুরু হয়েছিল প্রকল্পের কাজ। এ বার কাজের প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে সেই ব্যবসায়ীদের জন্য দোকান ঘর তৈরি শুরু করল প্রশাসন।
রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিশ্রুতি যে কেবল মুখের কথা ছিল না, এটাই তার বড় প্রমাণ।’’
৩৪০ মিটার দীর্ঘ স্কাইওয়াকটির উপরের অংশের মাঝে থাকছে সাড়ে আট ফুট বাই চার ফুটের প্রায় ১৪৭টি দোকান। দু’পাশে থাকছে ১১ ফুটের হাঁটার রাস্তা। প্রতিটি দোকানই হবে শাটার দেওয়া। থাকবে বিদ্যুৎ সংযোগও। শনিবার প্রকল্প নির্মাণকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৮২টি দোকান ঘর তৈরি হয়েছে। রানি রাসমণি রোড দোকানদার সমিতির তরফে চঞ্চল শীল বলেন, ‘‘১৮ মাসের মধ্যে দোকান দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। এখন দোকান হচ্ছে দেখেছি। এ বার কাগজপত্র-সহ দোকান ঘর আমাদের হস্তান্তর করে দিলেই খুশি হব।’’
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ঢোকার রাস্তা রানি রাসমণি রোডের উপরে যানবাহন ও দর্শনার্থীদের জট কাটাতে স্কাইওয়াক প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিকল্পনা হয়, দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের সামনে থেকে মন্দিরের সিংহদুয়ার পর্যন্ত প্রায় ৩৪০ মিটার লম্বা স্কাইওয়াক তৈরি হবে। যার নীচ দিয়ে চলবে শুধু যানবাহন এবং উপরে মাঝখানে দোকান ও দু’পাশে দর্শনার্থীদের হাঁটার জায়গা থাকবে। এর জন্য রানি রাসমণি রোডের দু’পাশে ১৩৭টি দোকান ভাঙার প্রয়োজন হয়েছিল। সেই জন্য সব দোকানদারদের মন্দিরের পিছন দরজার রাস্তায় অস্থায়ী দোকান তৈরি করে পুর্নবাসন দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু তাঁদের উচ্ছেদ করে দেওয়া হচ্ছে এবং স্কাইওয়াক তৈরির পরে সেখানে দোকান পাওয়া যাবে কি না, সেই আশঙ্কায় পুর্নবাসন নিতে বেঁকে বসেন ব্যবসায়ীরা। শুরু হয় আন্দোলন। রাস্তা আটকে বিক্ষোভ থেকে শুরু করে অন্য রাজনৈতিক দলের সভা, মিছিল সবই চলতে থাকে। শেষে ব্যবসায়ীরা আদালত পর্যন্ত যান।
প্রকল্প ঘোষণার পরে এই টালবাহানাতেই প্রায় এক বছর কেটে যায়। শেষে প্রশাসন রাতারাতি ওই রাস্তার দু’পাশের সব দোকান ভেঙে দেয়। পরে অবশ্য অস্থায়ী দোকানের চাবি নিয়ে নেন ব্যবসায়ীরা। তবে কাজ শুরুর পরে বেশ কিছু সমস্যার কারণে কয়েক বার প্রকল্প শেষ করার সময়সীমা পেরিয়ে যায়। সম্প্রতি স্কাইওয়াকের কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে তা নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেন পুরমন্ত্রী। স্কাইওয়াকে ওঠার জন্য ৪টি লিফট, ৭টি চলমান সিঁড়ি ও ৫টি সিঁড়িও তৈরির কাজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy