Advertisement
E-Paper

প্রতারণার জালে খোদ এজি, গ্রেফতার যুবক

প্রতারিত হয়ে এক আইনজীবীর কাছে পরামর্শ চাইতে এসেছিলেন তাঁর পরিচিত এক শিক্ষক। কথায় কথায় প্রতারকের নাম শুনেই আঁতকে উঠলেন সেই আইনজীবী। কারণ, বিমা সংস্থার এজেন্ট সেজে ওই শিক্ষকের মতো তাঁর কাছ থেকেও কয়েক লক্ষ হাতিয়ে নিয়েছেন ওই প্রতারক!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৭
ধৃত: কৃশানু গোস্বামী। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: কৃশানু গোস্বামী। নিজস্ব চিত্র

প্রতারিত হয়ে এক আইনজীবীর কাছে পরামর্শ চাইতে এসেছিলেন তাঁর পরিচিত এক শিক্ষক। কথায় কথায় প্রতারকের নাম শুনেই আঁতকে উঠলেন সেই আইনজীবী। কারণ, বিমা সংস্থার এজেন্ট সেজে ওই শিক্ষকের মতো তাঁর কাছ থেকেও কয়েক লক্ষ হাতিয়ে নিয়েছেন ওই প্রতারক!

আইনজীবী অবশ্য যে সে কেউ নন, খোদ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। লালবাজার সূত্রে খবর, মার্চের গোড়ায় এজি কলকাতা পুলিশের এক কর্তার কাছে অভিযোগ জানান, সার্ভে পার্কের বাসিন্দা কৃশানু গোস্বামী নামে এক যুবক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জীবনবিমা করিয়ে দেওয়ার অছিলায় তাঁর কাছ থেকে লাখ দশেক টাকা হাতিয়ে চম্পট দিয়েছে। পালানোর আগে সে জীবনবিমার ‘পলিসি’-র নথি তাঁকে দিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই নথি জাল। এর পরেই নড়েচড়ে বসেন লালবাজারের কর্তারা। দিন কয়েক আগে ওই যুবক ধরা পড়ে যান গোয়েন্দাদের হাতে।

কিশোর দত্ত শনিবার বলেন, ‘‘বছর দুয়েক ধরে কৃশানু আমার কাছে আসছেন। কিন্তু আমাকে এ ভাবে ঠকাবেন বুঝতে পারিনি। এখন তো শুনছি, একটি চালের কলের মালিক-সহ বহু লোকের কাছ থেকেই উনি লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।’’

পুলিশ জানায়, ভিক্টোরিয়া কলেজের ওই শিক্ষক মাসখানেক আগে এজি-র কাছে গিয়েছিলেন। তিনি এজি-কে জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জীবনবিমা করিয়ে দেওয়ার নামে কৃশানু নামে এক যুবক তাঁর কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়েছেন। টাকা নেওয়ার কিছু দিন পরে ওই যুবক ওই শিক্ষককে পলিসি-র নথিপত্র দিয়ে গিয়েছিলেন। পলিসি-র নথি দেখে শিক্ষকের সন্দেহ হয়। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তাঁকে জানানো হয়, পলিসি-র নথি জাল। এই পরিস্থিতিতে কী করণীয় তা জানতেই ওই শিক্ষক এজি-র কাছে গিয়েছিলেন।

গোয়েন্দা দফতরের এক অফিসার জানান, শিক্ষকের কথা শুনে সন্দেহ হয় এজি-র। কারণ, ‘কৃশানু’ নামটির সঙ্গে তিনি পরিচিত। তিনিও ওই যুবকের কাছে ওই ব্যাঙ্কের জীবনবিমা পলিসি করিয়েছেন। কৃষাণু তাঁকেও পলিসি-র নথি দিয়ে গিয়েছেন। সন্দেহ বাড়তে থাকে এজি-র। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এজি-ও যোগাযোগ করে জানতে পারেন, তাঁর পলিসি-র নথিও জাল।

এজি-র কাছ থেকে দশ লক্ষ টাকা কী ভাবে হাতালেন কৃশানু? গোয়েন্দারা জানান, দশ লক্ষ টাকার বিমার জন্য দশ বার এক লক্ষ টাকা করে দিতে বলেছিলেন কৃশানু। প্রথম দফার টাকা পাওয়ার পরে তিনি এজি-কে জানান, এক বারে বাকি নয় লক্ষ টাকা দিয়ে দিলে, কুড়ি শতাংশ ছাড় মিলবে। তা জেনে নয় লক্ষ টাকা দিয়ে দেন এজি।

কী করে ধরা পড়লেন কৃশানু? লালবাজারের এক কর্তা জানান, শ্যামপুকুর থানার অন্য একটি প্রতারণার মামলায় আদতে সিঙ্গুরের বাসিন্দা কৃষাণু ধরা পড়েন। তত দিনে এজি-র অভিযোগ পৌঁছে গিয়েছে লালবাজারে। ওই প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার করে এজি-র বিষয়ে টানা জেরা করতেই দোষ কবুল করেন কৃশানু। শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ এখন কৃশানুকে এখন জেরা করছে অন্য প্রতারণার হদিস পেতে। বর্ধমানের একটি প্রতারণার মামলাতেও তিনি অভিযুক্ত।

Fraud Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy