Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বারো ঘণ্টা না কাটতেই ফের ‘ঝাঁপ’ মেট্রোয়

শনিবার ছেলে কোলে নিয়ে মায়ের ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনার ১২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রবিবার সকালে ফের ‘ঝাঁপ’ মেট্রোয়। এ দিনের ঘটনায় গুরুতর জখম হন এক যুবক। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪০
Share: Save:

শনিবার ছেলে কোলে নিয়ে মায়ের ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনার ১২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রবিবার সকালে ফের ‘ঝাঁপ’ মেট্রোয়। এ দিনের ঘটনায় গুরুতর জখম হন এক যুবক। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর।

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সুজয় চক্রবর্তী (৪৫)। বাড়ি বড়তলা এলাকায়। মেট্রো সূত্রে খবর, এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ যখন একটি ডাউন মেট্রো গিরিশ পার্ক স্টেশনে ঢুকছিল, তখনই প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো ওই যুবক ট্রেনের সামনে ‘ঝাঁপ’ দেন। আচমকা এক যুবককে ট্রেনের সামনে এসে পড়তে দেখে ইমার্জেন্সি ব্রেক কষেন চালক। ট্রেনটি সামান্য এগিয়ে থেমে যায়। কিন্তু ওই যুবক ট্রেনের সামনে ধাক্কা খেয়ে দু’টি কামরার মাঝে আটকে যান। মেট্রোকর্মী ও পুলিশ এসে জখম যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

এই ঘটনার জেরে প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে মেট্রো পরিষেবা। মেট্রোকর্তারা জানান, ওই সময়ে ট্রেন চলে শুধু ময়দান থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পৌনে ১২টা নাগাদ স্বাভাবিক হয় পরিষেবা।

পুলিশ জানায়, সুজয়বাবু তেমন কিছু কাজকর্ম করতেন না। বাড়ির লোকজন পুলিশকে জানিয়েছে, অনেক দিন ধরেই তাঁর মানসিক অবসাদ ছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, অবসাদ থেকেই এই ঘটনা।

পুলিশ জানায়, শনিবার ছেলেকে কোলে নিয়ে মহিলার ‘ঝাঁপ’ দেওয়ার ঘটনায় কোনওমতে বেঁচে গিয়েছে বছর পাঁচেকের শিশুটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মায়ের। মৃতার নাম মৌ দাস। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মেট্রো স্টেশনে ঢোকার পরেই মৌদেবী শিশুটিকে নিয়ে মেট্রোর সামনে ঝাঁপ দেন। যাত্রীদের চেঁচামেচিতে চালক ট্রেন থামালেও বাঁচানো যায়নি মহিলাকে। শিশুর কান্না শুনে তড়িঘড়ি তাকে মেট্রোর কামরার তলা থেকে বার করে এনে হাসপাতালে পাঠান মেট্রোকর্মীরা। এসএসকেএম সূত্রে খবর, আহত শিশুটি এখন কিছুটা সুস্থ হলেও তার আতঙ্ক কাটেনি।

বেহালার বাসিন্দা মৌদেবী শনিবার রাতে কী কারণে এমন ঘটনা ঘটান, তা এখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। পুলিশ জানায়, মৌদেবীর নিজের বাড়ি বা শ্বশুরবাড়ির তরফে কারোর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশ নিজেই একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।

রবিবার পুলিশ মৌদেবীর স্বামী-সহ পরিবারের বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছে। তবে কেউই কোনও অভিযোগ করতে রাজি হননি। মৌদেবীর স্বামী সন্তু দাসের নিজস্ব ব্যবসা রয়েছে। তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁদের পারিবারিক জীবনে কোনও সমস্যা ছিল না। তবে কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা তিনিও বুঝতে পারছেন না বলে দাবি। পুলিশ জানায়, তথ্য সংগ্রহ করতে মৌদেবীর ফোনের কললিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পরপর দু’দিন এমন ঘটায় চিন্তায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, নিয়মিত বিজ্ঞাপন, নাটক, ঘোষণা, সিসিটিভি-র প্রহরা, সবই চলছে। তবু চলন্ত মেট্রোর সামনে ‘ঝাঁপ’ ঠেকানো যাচ্ছে না। এই প্রবণতা ঠেকাতে নতুন কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়েই চিন্তায় মেট্রো কর্তারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suicide Metro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE