প্রতীকী ছবি।
জেল হেফাজতে এক বন্দির মৃত্যুর ঘটনায় রবিবার তাঁর আত্মীয়েরা বিক্ষোভ দেখালেন টিটাগড় থানার সামনে। এর জেরে কিছু ক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে যায় বি টি রোড। অবরোধকারীদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তিও হয় বলে দাবি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তদন্তের আশ্বাস দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও কারা দফতর সূত্রের খবর, শনিবার দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে মইনুদ্দিন খান (১৯) নামে এক বন্দির স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময়েই চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই বন্দি অসুস্থ থাকায় তাঁকে প্রথমে ব্যারাকপুর বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখান থেকে শনিবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে যাওয়ার পথেই দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে কিছু রুটিন কাগজ নেওয়ার জন্য গেলে মইনুদ্দিনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, ৭ ডিসেম্বর ভোরে টিটাগড়ের একটি খাটালের পিছনে ওই তরুণকে ধরেছিলেন স্থানীয় দুধ বিক্রেতারা। অভিযোগ, খাটালে ঢুকে চুরির চেষ্টা করছিলেন ওই তরুণ। তাঁকে মারধর করে খাটালের একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।
খবর পেয়ে টিটাগড় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তরুণকে থানায় নিয়ে আসে। চুরির চেষ্টার অভিযোগে ওই দিনই তাঁকে ব্যারাকপুর আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দিলে প্রথমে ব্যারাকপুর মহকুমা সংশোধনাগার ও পরে দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে তাঁকে পাঠানো হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই অসুস্থ থাকায় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ মইনুদ্দিনকে বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান।
এডিজি (কারা) পীযূষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘বি এন বসু হাসপাতাল থেকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়মমাফিক নিয়ে আসা হয়েছিল। সেখানেই মইনুদ্দিনকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।’’
মইনুল খান নামে মইনুদ্দিনের এক আত্মীয়ের অভিযোগ, ‘‘ঘটনার দিন ভোরে শৌচকর্মের জন্য বেরিয়েছিল মইনুদ্দিন। মিথ্যা অভিযোগে ওকে ধরে প্রথমে বেধড়ক মারা হয়। শনিবার ওকে অবশ্য জেলখানায় নিয়ে যাওয়ার পরে ওর সঙ্গে কেমন আচরণ করা হয়েছে, তা আমরা জানি না। কিন্তু ওর মৃত্যু সম্পর্কে আমাদের প্রথমে কোনও
তথ্য দেওয়া হয়নি। রাত আড়াইটের সময়ে জানতে পারলাম, ছেলেটা সন্ধ্যা ছ’টায় মারা গিয়েছে।’’
মইনুদ্দিনের মৃত্যুর খবর শোনার পরে প্রথমে সংশোধনাগারে যান পরিবারের লোকেরা। রবিবার দুপুরে টিটাগড় থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরিবারের
ছোটরাও শামিল হয় সেই বিক্ষোভে। অবরোধ করা হয় বি টি রোড। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও শুরু হয়। মারধরের জেরেই এই মৃত্যু কি না, সেই তদন্তের দাবি জানাতে থাকেন মইনুদ্দিনের পরিবারের সদস্যেরা।
শেষ পর্যন্ত পুলিশ আধিকারিকদের তরফে ঘটনার পূর্ণ তদন্তের আশ্বাস পেলে ওই অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। যান চলাচলও স্বাভাবিক হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy