প্রতীকী ছবি
মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব। ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার। কলকাতা পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর লিপিকা খন্না ওই দিন কর্মীদের নিয়ে ডেঙ্গি-সচেতনতার প্রচার চালাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে থাকা বছর পঞ্চাশের এক মহিলাকে মারধরের হুমকি দেন তৃণমূলেরই অন্য গোষ্ঠীর লোকেরা। পরের দিন ওই মহিলাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।
লিপিকার অভিযোগ, ‘‘ওই মহিলা কর্মী আমার সঙ্গে থেকে ভাল কাজ করছেন। এলাকার সমস্যাগুলি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছেন। সেটাই পছন্দ হচ্ছিল না তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর লোকেদের। সেই ‘অপরাধে’ তাঁরা ওই কর্মীকে আমার সামনেই মেরে ফেলার হুমকি দেন। শনিবার তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরও করা হয়।’’ কসবা থানায় মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করার পরে দু’দিন কেটে গেলেও অভিযুক্তেরা গ্রেফতার না হওয়ায় সোমবার রাতে কাউন্সিলর থানায় যান। লিপিকার অভিযোগ, ‘‘১০৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কয়েকশো মানুষ থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। আমাকে কটূক্তি করেন ওঁরা। আমার একটাই প্রশ্ন, একই দলের কর্মী আমরা। তা-ও পাশের ওয়ার্ডের তৃণমূলকর্মীরা কেন থানা ঘেরাও করে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাবেন?’’ পুলিশি সূত্রের খবর, বিক্ষোভের জেরে কাউন্সিলর রাত ২টো পর্যন্ত থানায় আটকে থাকেন।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ আগে ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। লিপিকার অনুগামীদের অভিযোগ, ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে সুশান্তের অনুগামীদের অনেকেই সক্রিয়। লিপিকাকে হেয় করতেই এই কাজ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সুশান্ত বলেন, ‘‘যাঁর হয়ে লিপিকা কথা বলছেন, তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় বেআইনি কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। তারই প্রতিবাদ করেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরাই থানায় গিয়েছিলেন। আমার ওয়ার্ডের কেউ থানায় যাননি।’’ দু’পক্ষই মঙ্গলবার একে অপরের বিরুদ্ধে কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
ওই মহিলা তৃণমূলকর্মীর অভিযোগ, ‘‘আমি দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী। অথচ, লিপিকাদির সঙ্গে কাজ করি বলে সুশান্ত ঘোষের অনুগামীরা আমাকে বেধড়ক মারধর করেছে। পুলিশ এখনও তাদের ধরতে পারেনি। তাদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবিতে থানায় গেলে উল্টে সুশান্ত ঘোষের অনুগামীরা অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলে।’’ স্থানীয় এক বাসিন্দা তাপসী দে-র পাল্টা অভিযোগ, ‘‘১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের ওই অনুগামী মিথ্যা কথা বলছেন। ওঁকে আমরা কেউ মারধর করিনি। তিনি এলাকায় একাধিক অনৈতিক কাজ করে চলেছেন। তার বিরুদ্ধেই সরব হয়েছিলেন স্থানীয়েরা।’’
পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজে আপাতত তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy