অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ-কাণ্ডে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের হাতে ধৃত পাঁচ জনের মধ্যে আব্দুল সেলিম গাজি, আশিক ইকবাল এবং ফারুক মল্লিকের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। সেলিম ওরফে বাবলুর এবং আশিক ওরফে বাপ্পার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদে। হাড়োয়ার বাসিন্দা ফারুক। ধৃত তিন জনেই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসাবে এলাকায় পরিচিত।
স্থানীয় সূত্রের খবর, আশিক এবং সেলিমের স্ত্রীরা তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যা। তাঁরা বর্তমানে এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসাবে পরিচিত। হাড়োয়ার বাগানাটি গ্রামের বছর তিরিশের যুবক ফারুকও এলাকার সক্রিয় তৃণমূলের কর্মী। কার্তুজ-কাণ্ডে তৃণমূলের এই তিন সক্রিয় কর্মী গ্রেফতার হওয়া নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধী দলগুলি। বিজেপি, সিপিএমের নেতা ও কর্মীদের দাবি, যে কোনও নির্বাচন এলেই যে তৃণমূল বন্দুক-গুলির রাজনীতি শুরু করে, এই ঘটনায় তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।
এ দিন হাসনাবাদ এলাকার দুই বাসিন্দার বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, দু’টি বাড়িই তালাবন্ধ। এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব সেলিম এবং আশিকের। সেই ভয়ে এঁদের দু’জনের সম্পর্কে এলাকার মানুষও মুখ খুলতে নারাজ।
বসিরহাট বিজেপি সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার সভাপতি পলাশ সরকার বলছেন, ‘‘নির্বাচন এলেই তৃণমূল যে বন্দুক-গুলি নিয়ে রাজনীতি করে, তা এ বার প্রমাণ হয়ে গেল। শুধু তোলাবাজিই নয়, জীবন নিয়েও খেলা করছে তৃণমূল। এসটিএফ দিয়ে তদন্তে কিছু হবে না। এনআইএ তদন্তের আবেদন জানাচ্ছি।’’
সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দারের দাবি, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন একটু তৎপর হলে হাসনাবাদ, হাড়োয়া-সহ বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকা থেকে এমন অনেক অস্ত্র পাওয়া যাবে। আমরা চাই, অবৈধ অস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব বন্ধ হোক।’’
দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে বসিরহাট তৃণমূল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘দুষ্কৃতীদের কোনও দল হয় না। ওরা এক সময়ে তৃণমূল করত। বর্তমানে ওরা কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। দোষ করলে শাস্তি পেতে হবেই।’’
বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমানের বক্তব্য, ‘‘আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে বসিরহাট জুড়ে তল্লাশি অভিযান জারি আছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)