ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। নিজস্ব চিত্র।
পশুপ্রেমীদের অবস্থানে লাঠিচার্জ করল পুলিশ। ঘটনায় বেশ কয়েক জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তও রয়েছেন। বিধাননগর কমিশনারেট যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
নীলরতন সরকার হাসপাতাল চত্বরে ১৬টি কুকুর ছানা খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত নার্সদের কেন হাসপাতালে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তার প্রতিবাদে সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের কাছে অবস্থানে বসেছিলেন কয়েক জন পশুপ্রেমী। মঙ্গলবার গভীর রাতে সেই অবস্থান বিক্ষোভ তুলতে যায় পুলিশ। সেই সময় দু’পক্ষই বচসায় জড়িয়ে পড়ে।
পশুপ্রেমীদের অভিযোগ, পুলিশ আচমকাই সেখান থেকে জোর করে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। এই ঘটনায় পুলিশের লাঠিতে আহত হয়েছেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত এবং অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়। তাঁদের সঙ্গীদেরও পুলিশ টেনেহেঁচড়ে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ।
কী হয়েছিল? মঙ্গলবার দুপুর থেকে সল্টলেকে ওই অবস্থানে বসেছিলেন পশুপ্রেমীরা। রাত ১টা পর্যন্ত কোনও সমস্যা হয়নি বলে তাঁদের দাবি। রাত একটা নাগাদ পুলিশ এসে তাঁদের ওই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে, এমনটাই অভিযোগ। আন্দোলনকারীদের তরফে পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁরা অত রাতে ওখান থেকে যাবেন না। অনেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। সকাল হলে অবস্থান তুলে নেওয়া হবে। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশকে এত কথা জানানোর পরেও তাঁরা অবস্থানের অনুমতি দেয়নি। জোর করে তুলে দেওয়া হয়। এমনকি লাঠিচার্জও করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসার সেজে সোনা-হিরে লুঠ গিরীশ পার্কে
অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তের অভিযোগ, “ওঁদের সঙ্গে মহিলা পুলিশ ছিল। তা সত্ত্বেও পুরুষ পুলিশ কর্মীদের দিয়ে মহিলাদের নিগ্রহ করা হয়েছে। গালিগালাজ করতেও ছাড়েননি ওঁরা। কেন পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান জোর করে তুলতে গেল? কেন এত জনকে মারধর করা হল, তার জবাব দিতে হবে।”
ওই ঘটনায় আহত বেশ কয়েক জন এখনও চিকিৎসাধীন। তাঁদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চোট, আঘাত লেগেছে। অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “কী ভাবে প্রতিবাদ করতে হয়, তা আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই শিখেছি। আমরা তো রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাইনি। স্বাস্থ্য ভবন থেকে অনেকটা দূরে অবস্থানে বসেছিলাম। পুলিশ মাঝ রাতে এ ভাবে মারধর করবে ভাবতেও পারিনি। পুলিশ জোর করে মোবাইলের ভিডিও, ছবি, সব মুছে দেওয়ার চেষ্টা করে। যাতে তাঁদের ছবি প্রকাশে না আসে।”
আরও পড়ুন: আনন্দপুরের স্কুলের গেটের তালা ভেঙে চুরি দুষ্কৃতীদের
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় উঠতে শুরু করেছে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সদর) অমিত পি জাভালগি বলেন, “ওঁদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশ কোনও ভাবেই বাধা দেয়নি। গভীর রাতে ওই এলাকার শান্তি ভেঙেছেন ওঁরা। কয়েকজন বিক্ষোভকারী ওখানে মহিলা পুলিশকর্মীদের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করেন। পুলিশ ওই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ধরতে গেলে বাকি বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপর চড়াও হন। এর পর শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশের এই দাবি মানতে নারাজ পশুপ্রেমীরা। তাঁরা এই ঘটনার প্রতিবাদে বড় আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দেবলীনারা।
(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদেরকলকাতাবিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy