E-Paper

এমবিবিএস পরীক্ষায় ফেল, তিন বার উত্তরপত্র যাচাই চার পড়ুয়ার! ফাঁপরে কলেজ কর্তৃপক্ষ

এমনই কাণ্ড ঘটেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চার পড়ুয়ার ক্ষেত্রে। যাঁরা কি না, ফার্স্ট প্রফেশনাল এমবিবিএসে বসেছিলেন (এমবিবিএস পাঠ্যক্রমের বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের প্রথম পরীক্ষা)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৩ ০৮:০৫
Examination

বেশি নম্বরের আশায় পুনর্মূল্যায়নে করতে দেওয়ার পর ফল বেরোতেই দেখা গেল, আবেদনকারীরা সকলেই ফেল করেছেন। প্রতীকী ছবি।

কারও প্রাপ্ত নম্বর ছিল সত্তরের উপরে। কারও সত্তরের কাছাকাছি। প্রত্যেকেই প্রাপ্ত নম্বর ৭৫ হবে আশা করে উত্তরপত্রের পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছিলেন। কারণ, ডাক্তারিতে কোনও বিষয়ে ওই নম্বর পেলে, ওই বিষয়ে অনার্স বলে গ্রাহ্য করা হয়। এ ক্ষেত্রে পুনর্মূল্যায়নের ফল বেরোতে দেখা গেল, আবেদনকারীরা সকলেই ফেল করেছেন!

এমনই কাণ্ড ঘটেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চার পড়ুয়ার ক্ষেত্রে। যাঁরা কি না, ফার্স্ট প্রফেশনাল এমবিবিএসে বসেছিলেন (এমবিবিএস পাঠ্যক্রমের বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের প্রথম পরীক্ষা)। বায়োকেমিস্ট্রিতে ৬০-৭০ শতাংশ নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের এমন ফল নিয়ে সন্দিহান কলেজ কর্তৃপক্ষও। কী ভাবে এমন হল, তা জানতে রাজ্যের স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন কাণ্ডে বিস্মিত শিক্ষক-চিকিৎসকদের একাংশও। উপায় না দেখে ওই চার উত্তরপত্রের তৃতীয় বারের জন্য মূল্যায়নের ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। প্রয়োজনে তাঁদের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষারও ব্যবস্থা হবে।

জানা যাচ্ছে, গত ২১ মার্চ এমবিবিএসের ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। তাতে কলকাতা মেডিক্যালের এক ছাত্রী-সহ চার পড়ুয়ার বায়োকেমিস্ট্রির প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬২ থেকে ৭০-এর মধ্যে। কোনও বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর ৭৫ হলে সেটিকে অর্নাস বলা হয়। সেই লক্ষ্যেই ওই পড়ুয়ারা নিজেদের বায়োকেমিস্ট্রির উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেন। এক শিক্ষক-চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ডাক্তারিতে কোনও বিষয়ে অনার্স পাওয়াটা যথেষ্ট কঠিন।’’

কিন্তু, গত ৯ মে পুনর্মূল্যায়নের ফল বেরোতে দেখা যায়, নম্বর বৃদ্ধি দূর-অস্ত্, চার জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে। পাশ নম্বর ৫০। ফলে চার জনই বায়োকেমিস্ট্রিতে অকৃতকার্য হয়েছেন। পড়ুয়াদের প্রশ্ন, তা হলে প্রথমে যিনি উত্তরপত্র দেখেছিলেন, তিনি, না কি দ্বিতীয় পরীক্ষক, কে ঠিক?

সূত্রের খবর, বুধবার স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ামকের সঙ্গে দেখা করেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষ। সেখানে ওই কলেজেরই বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রধান চিকিৎসককে ডাকা হয়। তিনিও জানান, ওই চার পড়ুয়া কোনও ভাবে অকৃতকার্য হতে পারেন না। সূত্রের দাবি, ওই উত্তরপত্রগুলি দু’বার পুনর্মূল্যায়ন হয়েছে। কিন্তু, প্রতিটি উত্তর বিশদে দেখা হয়নি। প্রথমে যিনি দেখেছিলেন, সেটিই রয়ে গিয়েছে। পুনর্মূল্যায়নে শুধু উত্তরপত্রের উপরের পৃষ্ঠার নির্দিষ্ট ছকে নম্বর বসানো হয়েছে।

পড়ুয়ারা জানাচ্ছেন, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অনলাইন পোর্টালও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ওই চার পড়ুয়ার জন্য ফের সেটি খোলা হয়। কলকাতা মেডিক্যালের পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, এ বছর রাজ্যে ২৫০টি উত্তরপত্রের পুনর্মূল্যায়নের আবেদন জমা পড়েছিল। অন্য এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা শুরুর কয়েক দিন আগে পুনর্মূল্যায়নের ফল এসেছিল। বিরাট পার্থক্য হওয়ায় কোনটি ঠিক, তা নিয়ে সকলেই সন্দিহান ছিলেন।’’

রাজ্যের স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পাল বলেন, ‘‘প্রথমে কে খাতা দেখেছিলেন, সেটা দেখা হচ্ছে। অতি দ্রুত তৃতীয় বার মূল্যায়ন হবে। তাতে পাশ নম্বর এলে, আর পরীক্ষা দিতে হবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta Medical College Hospital Exam MBBS

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy