Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভেড়িতে খুন সরকারি কর্মী

ভোটের রাতে সরকারি ভেড়ি এলাকায় ঢুকে এক সরকারি কর্মচারীকে পিটিয়ে মারল এক দল দুষ্কৃতী। আহত হয়েছেন‌ আরও ৩ জন। দু’জনের অবস্থা গুরুতর। ঘটনাস্থল সল্টলেকের নলবন ভেড়ি এলাকা।

গোপাল বর

গোপাল বর

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৫ ০১:২৯
Share: Save:

ভোটের রাতে সরকারি ভেড়ি এলাকায় ঢুকে এক সরকারি কর্মচারীকে পিটিয়ে মারল এক দল দুষ্কৃতী। আহত হয়েছেন‌ আরও ৩ জন। দু’জনের অবস্থা গুরুতর।

ঘটনাস্থল সল্টলেকের নলবন ভেড়ি এলাকা। শনিবার রাতে সেখানেই ‘তিনের ঘেরি’ নামের বড় ভেড়িটিতে ওই ঘটনা ঘটে। মৃতের নাম গোপাল বর (৫০)। আহতেরা হলেন সঞ্জয় কাঁজি, পরিতোষ ঘুঘু, অশোক পাল। পুলিশ জানায়, বাবলু মন্দির নামে আর এক সরকারি কর্মচারী ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি কোনও মতে লুকিয়ে পড়ে হামলার হাত থেকে রেহাই পান।

পুলিশের অনুমান, রাত ৮টা নাগাদ ওই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনায় আহত হাসপাতালে ভর্তি অশোক পাল জানান, রাতে সবে কাজ শেষ হয়েছে। খাওয়ার আয়োজন চলছিল। তিনি আর গোপাল চারপাশ কী অবস্থায় রয়েছে, তা দেখছিলেন। আর মৎস্যজীবীদের ঘরের সামনে ছিল বাবলু আর সঞ্জয়। আচমকা চিৎকার শোনা যায়। নিজেদের ঘরের দিকে কিছুটা এগোতেই তাঁরা দেখেন, জনা চার-পাঁচ ব্যক্তি মুখে-চোখে গামছা-কাপড় জড়িয়ে তাঁদের দিকে ছুটে আসছে। হাতে বাঁশ, রড, লাঠি।

অশোকবাবু বলেন, ‘‘ওরা এসেই গালিগালাজ করল। বলল, ‘ভেড়ির মালিক হয়েছিস?’ তার পরেই মারতে শুরু করল। গোপাল কোনও মতে পালিয়েছিল। কিন্তু পরে জানলাম, গোপাল পালাতে পারেনি।’’ আর এক আহত সঞ্জয় জানান, দুষ্কৃতীরা এক দল তাঁকে মারতে থাকল, অন্য দল ঘর ভাঙচুর করতে শুরু করল। তিনি কোনও মতে নিজেকে ছাড়িয়ে জলে ঝাঁপ দেন। বাবলুও ঘরের একটি জায়গায় লুকিয়ে পড়েই প্রাণে বাঁচেন বলে তাঁর দাবি।

পুলিশ জানায়, সল্টলেকের নাওভাঙা ও সুকান্তনগরের মাঝে ৪ নম্বর ভেড়ি এলাকার বাসিন্দা গোপাল বর। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি ভেড়িতে কাজ করেন। বাড়িতে মা, স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। গোপালের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা এলাকায়। তাঁর এক মেয়ে শিবানী রবিবার বলেন, ‘‘আমার বাবার খুনিকে খুঁজে বার করে শাস্তি দিক পুলিশ।’’

শনিবার রাতে দফতরের কর্মীর খুনের ঘটনার কথা শুনে মৎস্য দফতরের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। রবিবার গোপালবাবুর সহকর্মীরাও তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান।

তদন্তকারীদের একাংশের মতে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, নলবন ভেড়ি এলাকায় ৩টি বড় ভেড়ি ও ১৮টি ছোট ভেড়ি রয়েছে। তার মধ্যেই রয়েছে ‘তিনের ঘেরি’ নামের ওই বড় ভেড়ি। তাতে প্রায় ৩০-৪০ লক্ষ টাকার মাছ রয়েছে, যেগুলি তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, চোরের দল ভেড়িতে এক ধরনের জাল বিছিয়ে মাছ চুরি করত। গোপালবাবুরা সেই জাল তুলে ফেলতেন। সেই আক্রোশ থেকে হামলা হতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। কিন্তু এমন নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে গোপালবাবুকে, তাতে দুষ্কৃতীদের আক্রোশ যে খুবই বেশি ছিল, এমনটাই অনুমান পুলিশের। তদন্তকারীদের একাংশ জানান, হামলার পিছনে অন্য কারণও থাকতে পারে। এর পিছনে পেশাদার দুষ্কৃতীদেরও যোগ থাকতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE