Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশের থেকে ‘ছিনতাই’ দুষ্কৃতী

অভিযুক্ত দুষ্কৃতীকে আইনরক্ষকদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল তার সঙ্গীরা! খাস কলকাতায় পুলিশের হাত থেকে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা সাম্প্রতিক কালে ঘটেনি বলেই জানাচ্ছেন পুলিশকর্তারা।

পুলিশ কাল্লুকে গ্রেফতার করতে এলে বাধা দেয় তার সঙ্গীরা। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশ কাল্লুকে গ্রেফতার করতে এলে বাধা দেয় তার সঙ্গীরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৫
Share: Save:

লালবাজার থেকে নির্দেশ এসেছিল, তোলাবাজি এবং অস্ত্র-আইন মামলায় অভিযুক্ত এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে হবে। সেই মতো ওই দুষ্কৃতীর খোঁজে এক অফিসারের নেতৃত্বে অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল। অভিযুক্তের সন্ধান পাওয়া গেল ঠিকই, কিন্তু তাকে নিয়ে আসার সময়ে আক্রান্ত হলেন ওই পুলিশকর্মীরা। এমনকি, অভিযুক্ত দুষ্কৃতীকে আইনরক্ষকদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল তার সঙ্গীরা! খাস কলকাতায় পুলিশের হাত থেকে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা সাম্প্রতিক কালে ঘটেনি বলেই জানাচ্ছেন পুলিশকর্তারা।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বেনিয়াপুকুর থানার আড্ডিবাগানে। দুষ্কৃতীদের আক্রমণে জখম পুলিশকর্মীদের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্ত দুষ্কৃতী বা তার সঙ্গীদের খোঁজ মেলেনি। ওই দিনই পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকায় প্রকাশ্যে মদ্যপানের খবর পেয়ে অভিযুক্তদের ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। সেখানেও পুলিশের হাত থেকে অভিযুক্তদের ছিনিয়ে নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কড়েয়ায় পুলিশ নিগ্রহের আর একটি ঘটনায় অবশ্য মূল অভিযুক্তকে পাকড়াও করা গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, তপসিয়া থানার এসআই সপ্তর্ষি ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশকর্মীদের একটি দল সোমবার আড্ডিবাগানে শেখ শাহনওয়াজ ওরফে ছাট্টান কাল্লু নামে ওই দুষ্কৃতীকে ধরতে যায়। অভিযোগ, ছাট্টানকে গ্রেফতার করে আনার সময়ে এলাকাবাসীদের নিয়ে বাহিনীর উপরে চড়াও হয় তার সঙ্গীরা। তারা পুলিশকর্মীদের ধাক্কা এবং মারধর শুরু করে। এমনকি তাঁদের লক্ষ্য করে ইটও ছোড়া হয়। বাধা পেয়ে পুলিশবাহিনী প্রতিরোধ করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের গাড়ি ঘিরে ফেলেন। অভিযোগ, সেই সুযোগে চম্পট দেয় ছাট্টান। পরে বেনিয়াপুকুর থানা থেকে আরও পুলিশ পৌঁছে অবস্থা আয়ত্তে আনতে পারলেও কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

পুলিশ জানিয়েছে, ছাট্টান কাল্লুর বিরুদ্ধে তিলজলা, তপসিয়া, কড়েয়া ও বেনিয়াপুকুর এলাকায় তোলাবাজি-সহ একাধিক অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশকর্মীদের মারধর করার পুরনো অভিযোগও রয়েছে। সোমবার রাতে লালবাজারের নির্দেশে তপসিয়া থানার একটি দল তোলাবাজি এবং অস্ত্র আইনের মামলায় ছাট্টানকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিল। ওই ঘটনায় পুলিশ ছাট্টানের সঙ্গী লাফা ফিরোজ, মুস্তাকি, বাবলু, গুড্ডু, রিয়াজ, টাক্কা পাপ্পু, রাজু-সহ মোট ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে।

এই ঘটনার কিছু আগে সোমবার বিকেলেই কড়েয়া থানার ঝাউতলা রোডে ফুটপাতে বেআইনি নির্মাণ আটকাতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়তে হয় পুলিশকর্মীদের। গ্রেফতার কার হয়েছে মূল অভিযুক্ত মহম্মদ মোজেম জাভেদ ওরফে গুড্ডু। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন বিকেলে কড়েয়া থানা খবর পায়, ঝাউতলা রোডে ফুটপাত আটকে নির্মাণকাজ চলছে। কড়েয়া থানার অফিসারেরা গিয়ে দেখেন, দু’জন শ্রমিক কাজ করছেন। কার নির্দেশে ওই কাজ চলছে জানতে চাইলে সেখানে আসে গুড্ডু। অভিযোগ, সে অফিসারদের সঙ্গে বচসা শুরু করে এবং তাঁদের কাজে বাধা দিয়ে হেনস্থা করে। পরে কড়েয়া থানার অফিসার অনুপম চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে গুড্ডুকে ধরে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE