অবশেষে এলাকা ভিত্তিক কর চালু হতে চলেছে কলকাতা পুরসভায়। আগামী ১ এপ্রিল থেকে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে কর নির্ধারণ করা হবে সেই পদ্ধতিতে। বুধবার মেয়র পারিষদের বৈঠকে তেমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরবোর্ড।
মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানান, পরিকাঠামোর নিরিখে শহরকে সাতটি শ্রেণিতে ভাগ করা হবে। সব থেকে উন্নত এলাকায় করের হার যেমন বেশি হবে, তেমনই কম টাকা দিতে হবে কম উন্নত এলাকায়। যেমন কর-মূল্যায়ন দফতরের এক আধিকারিক জানান, উন্নত পার্ক স্ট্রিটের এক ইউনিটের কর যদি ৮০ টাকা হয়, তবে তিলজলার সম পরিমাণ ইউনিটের কর হবে ৪০ টাকা। অর্থাৎ, প্রায় ৫০ শতাংশ কম। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, এলাকার পরিকাঠামোর উপরে ভিত্তি করে সম্পত্তি করের ক্ষেত্রে সমতা আনতেই এই ভাবনা। বহু নাগরিকের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই এই ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হচ্ছে।
যদিও ওই পদ্ধতি এখনই বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছে না পুর-প্রশাসন। মেয়র জানান, এলাকা ভিত্তিক কর ব্যবস্থা সংক্রান্ত যে আইন বিধানসভায় পাশ হয়েছে, তাতে তা আবশ্যিক বলা নেই। তাই তা আবশ্যিক নয়। মেয়র বলেন, ‘‘যাঁরা পুরনো পদ্ধতিতে কর দিতে চান, তাঁরা দিতে পারবেন। কেউ চাইলে নতুন পদ্ধতির সুযোগ পাবেন।’’ পুরনো পদ্ধতিতে করের কাঠামো একই এলাকায় ভিন্ন ছিল। যা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ ছিল এক শ্রেণির বাসিন্দার। পার্ক স্ট্রিটের একটি বাড়ির যত কর, ঠিক তার পাশেই অন্য বাড়ির ক্ষেত্রে তা ভিন্ন ছিল। সেই অসমতা দূর করতেই এই ভাবনা।
তবে যাঁরা পুরনো হারে কর দিয়ে লাভবান, তাঁরা ইতিমধ্যেই নয়া ব্যবস্থার বিরুদ্ধে পুর-কতৃর্পক্ষের কাছে আপত্তি জানিয়েছেন। তবে নতুন আইনে তাঁদের কথাও ভাবা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। অন্য দিকে, এলাকা ভিত্তিক কর প্রণয়ন করা হলে পুর-আয় অনেক বাড়বে বলে জানান আমলারাও।
যদি বেশির ভাগ নাগরিক বর্তমান পদ্ধতির আওতায় থাকতে চান, তবে নতুন ব্যবস্থা কতটা যুক্তিযুক্ত? মেয়রের দাবি, ‘‘বিভিন্ন এলাকার মানুষকে নিয়েই সমীক্ষা করা হয়েছে। তাঁরা নতুন করের আওতায় আসবেন বলেই ধারণা।’’