আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের হেনস্থার অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল। হস্টেলে ইন্ট্রোর নামে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের নানা ভাবে উত্যক্ত করার অভিযোগ দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে! গোটা ঘটনার উপর নজর রাখছেন আরজি কর কর্তৃপক্ষ।
আরজি করের প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ মানিকতলার হস্টেল। নিয়ম অনুযায়ী, সেই হস্টেলে কেবল প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারাই থাকতে পারবেন। অভিযোগ, সেখানে দ্বিতীয় বর্ষের কয়েক জন পড়ুয়াও রয়ে গিয়েছেন। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের হস্টেলে নানা ভাবে হেনস্থা বা ‘থ্রেট’ করা হয়। প্রশ্ন উঠছে, নিয়ম না-থাকা সত্ত্বেও কেন দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা প্রথম বর্ষের হস্টেলে থাকছিলেন? ফের কি আরজি করে ফিরছে ‘থ্রেট কালচার’?
দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে মারধর এবং হেনস্থার অভিযোগ তুললেন দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারাই! অভিযোগকারী পড়ুয়াদের দাবি, প্রথম বর্ষের কয়েক জন পড়ুয়া তাঁদের কাছে এসে ‘ইন্ট্রো’র নামে হেনস্থার অভিযোগ করেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, হস্টেলে দ্বিতীয় বর্ষের কয়েক জন পড়ুয়া তাঁদের কটূক্তি করেন। মারধরের চেষ্টাও করেন। সেই বিষয় নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হলে দ্বিতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়ারা চড়াও হন অভিযোগকারীদের উপর!
অভিযোগকারী সাগ্নিক পালও দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। তাঁর দাবি, ‘‘প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা হস্টেলে আমাদের হেনস্থার কথা জানায়। সেইমতো আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করি। কর্তৃপক্ষ আমাদের এবং দ্বিতীয় বর্ষের অভিযুক্ত পড়ুয়াদের ডেকে পাঠান। বৈঠকের পর কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের সতর্ক করেন।’’ সাগ্নিকের দাবি, তার পরেই তাঁদের অনুসরণ করেন তাঁরই সহপাঠীরা। রাস্তার মাঝেই দু’পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। ‘থ্রেট’ও দেওয়া হয়। তার পরই গোটা ঘটনা লিখিত ভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানান অভিযোগকারীরা।
আরও পড়ুন:
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর পরই ক্যাম্পাসে ‘থ্রেট কালচারের’ অভিযোগ ওঠে। অনেকেই এই হুমকি-সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সরব হন। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ-আন্দোলন হয়। ধর্মতলায় ১৭ দিন অনশন করেছিলেন এক দল আন্দোলনকারী। তাঁদের অন্যতম দাবিই ছিল আরজি কর-সহ রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজে হুমকি-সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে। পদক্ষেপ করতে হবে প্রশাসন। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর অনশন ওঠে। আন্দোলনকারীদের ‘শর্ত’ মেনে বেশ কিছু পদক্ষেপও করে সরকার। মেডিক্যাল কলেজে যাতে থ্রেট কালচার বা র্যাগিংয়ের মতো ঘটনা না-ঘটে, তা নিয়ে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
সেই আরজি করে আবার ‘থ্রেট কালচারের’ অভিযোগ উঠল। সাগ্নিকের কথায়, ‘‘র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাই।’’ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টির উপর নজর রাখছেন।’’