আমবাঙালির কাছে তা মেসি, মারাদোনার দেশ ঠিকই। আবার সাহিত্য, সিনেমারসিক বাঙালির কাছে আর্জেন্টিনার পরিচয়ও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। সাহিত্যিক হর্হে লুইস বোর্হেস বা হুলিও কোর্তাসার দেশ কিংবা চলচ্চিত্র পরিচালক ফার্নান্দো সোলানাসের দেশ হিসেবেও আর্জেন্টিনা অনেকের হৃদয়ের কাছাকাছি। এ বার সেই সাংস্কৃতিক আর্জেন্টিনার স্বাক্ষর বইমেলায় কলকাতার সামনে তুলে ধরার অঙ্গীকার করে গেলেন সে দেশের দূতাবাসের দুই আধিকারিক। আসন্ন ৪৯তম কলকাতা বইমেলার থিম দেশ হিসাবে আর্জেন্টিনার নাম সোমবারই ঘোষণা করেছেন উদ্যোক্তারা। সেই লোগো উন্মোচনে দেখা গেল, তাতে আর্জেন্টিনার সাহিত্যিকদেরই নাম।
এই উপলক্ষে শহরে এসেছেন আর্জেন্টিনার দূতাবাসের রাজনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রধান আন্দ্রেস সেবাস্তিয়ান রোখাস এবং দূতাবাসের কনসুলার শাখার প্রধান আনান্দি কেইপো রিয়াভিৎজ়। আনান্দি নামটি আবার ভারতীয় আনন্দী থেকেই। সত্যজিৎ রায়ের শহরে এসে তিনি আশ্বাস দিলেন, আর্জেন্টিনার সাহিত্য-চর্চার নানা দিক দেখতে পাবে কলকাতা। আর কলকাতার উদ্দেশ্যে আন্দ্রেস বলেছেন, ‘‘আর্জেন্টিনার সঙ্গে বাংলা বা ভারতের যোগ বহু পুরনো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ভিক্তোরিয়া ওকাম্পোর বন্ধুতা থেকে মারাদোনা, মেসির কলকাতা সফর— সবই ছুঁয়ে যান তিনি।’’ এ বার বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ২১ জানুয়ারি। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘সব দিক দেখে ওটাই বইমেলার উদ্বোধনের আদর্শ সময় বলে মনে হল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এমনই পরামর্শ দিয়েছেন।’’ ২২ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে বইমেলা। গত বার ২৭ লক্ষ লোকের ভিড় হয়েছিল, বই বিক্রি হয় ২৩ কোটির। এ বার ২৩ বা ২৬ জানুয়ারি কিংবা সরস্বতী পুজোর ছুটি এবং ফেব্রুয়ারির মাস পয়লা— সবই বইমেলার মধ্যে পড়ছে। ত্রিদিব বলছিলেন, ‘‘এত ছুটি, লোকের মাস পয়লার ভারী পকেটে ক্রয়ক্ষমতা অনুকূল থাকার কথা। তার উপরে হাওড়া পর্যন্ত মেট্রোয় জুড়ে যাওয়ায় মনে হয় নজিরবিহীন ভিড় হবে।’’
গিল্ড সভাপতি সুধাংশুশেখর দে অবশ্য বলছেন, ‘‘সল্টলেকের মাঠে বইমেলার স্টলের সংখ্যা আর বাড়ানো যাচ্ছে না।’’ অর্ধশতক পূর্তির প্রাক্কালে উদ্যোক্তারা গত পাঁচ দশকের স্মরণীয় ছবি সাজাতে চান। সেরা দশটি ছবিকে পুরস্কৃত করারও পরিকল্পনা রয়েছে। বইমেলায় বিভিন্ন দেশ, রাজ্যের স্টল, প্যাভিলিয়ন, লিটল ম্যাগাজ়িন তল্লাট, ছোটদের প্যাভিলিয়ন থেকে সাহিত্য উৎসব এ বারও থাকবে। বাংলাদেশের স্টল নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছেই। ত্রিদিব বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। বিষয়টি দিল্লির মাধ্যমে হওয়াই অভিপ্রেত।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)