Advertisement
E-Paper

মাত্র আড়াই হাজার টাকার লোভে নাইন এমএম নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরের উপর হামলা করতে কলকাতায়!

সুশান্ত ঘোষকে পিস্তল তাক করা যুবরাজ সিংহ পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁর উপর খুনের ভার ছিল না। ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরকে ভয় দেখানোর দায়িত্ব ছিল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দু’জন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৩৯
(বাঁ দিকে) শুক্রবার রাতে সঙ্গীর সঙ্গে স্কুটি চেপে এসে তৃণমূল কাউন্সিলরের উপর হামলার চেষ্টা যুবরাজের। (ডান দিকে) তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ।

(বাঁ দিকে) শুক্রবার রাতে সঙ্গীর সঙ্গে স্কুটি চেপে এসে তৃণমূল কাউন্সিলরের উপর হামলার চেষ্টা যুবরাজের। (ডান দিকে) তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য কলকাতার তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টা করেছিলেন আততায়ীরা। আর হাতে হাতে আড়াই হাজার টাকা পাবেন, ওই প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর বিহার থেকে দুই সঙ্গীকে নিয়ে শুক্রবার কলকাতায় আসেন অভিযুক্ত। বিহার থেকে হাওড়া ট্রেনে, তার পর ট্যাক্সি চেপে কলকাতা বন্দর এলাকায় উঠেছিলেন তাঁরা। শুক্রবার হামলার আগে পার্ক সার্কাস এলাকায় আসেন ওই আততায়ী। সুশান্ত-কাণ্ডের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। শনিবার কলকাতার এক ট্যাক্সিচালককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম আহমেদ। তাঁর ট্যাক্সিতে চেপেই অভিযুক্তেরা কলকাতায় ঘোরাঘুরি করছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। শুরু হয়েছে মূল ষড়যন্ত্রকারীর খোঁজও।

১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে শুক্রবার রাতেই এক তরুণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম যুবরাজ সিংহ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, আদতে তিনি বিহারের বৈশালীর বাসিন্দা। সুপারি নিয়ে দুই সঙ্গীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতায় আসেন ওই তরুণ। পুলিশের কাছে ধৃত জানিয়েছেন, তাঁদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে ডেকে আনা হয়। আড়াই হাজার টাকা হাতে হাতে পেয়ে যাবেন বলার পরে ‘অপারেশনে’ নামেন।

বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বৃহস্পতিবার ট্রেন থেকে হাওড়া স্টেশনে নামেন তিন জন। তার পর ট্যাক্সি চেপে যান কলকাতা বন্দর এলাকায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই ট্যাক্সিতেই পার্ক সার্কাস চত্বরে আসেন অভিযুক্তেরা। সেখান থেকে বাইপাস চত্বরে যান। জনৈক ইকবালের সঙ্গে দেখা হয়। সেখান থেকে স্থানীয় এক যুবকের স্কুটারে চেপে তৃণমূল কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছিলেন। তার পরেই নাইন এমএম পিস্তল হাতে হামলার চেষ্টা।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ধৃত ট্যাক্সিচালক আততায়ী এবং তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরেছেন। বৃহস্পতিবার তিন জনকে বন্দর এলাকায় একটি বাড়িতে রেখেও এসেছিলেন তিনি। আরও তথ্যের জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সুশান্তকে পিস্তল তাক করে গ্রেফতার হওয়া যুবরাজ পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁর উপর খুনের ‘ভার’ ছিল না। কাউন্সিলরকে ভয় দেখানোর দায়িত্ব ছিল তাঁর উপরে। তাঁর পিছনে আরও দুই সঙ্গী ছিলেন। কিন্তু ওই তরুণের পিছনে আর কাউকে দেখা যায়নি বলে জানাচ্ছে পুলিশ। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত জানিয়েছেন, কাউন্সিলরকে ‘ভয় দেখানোর’ জন্য তাঁকে সুপারি দিয়েছিলেন জনৈক মহম্মদ ইকবাল ওরফে গুলজ়ার। তাঁর কাছ থেকে যে নাইন এমএম পিস্তলটি পেয়েছে পুলিশ, সেটি তিনি ইকবাল তাঁকে দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, লকডাউনের সময় থেকে ইকবাল বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় থাকেন। তবে তিনিও আদতে বিহারের বাসিন্দা। যদিও ওই তথ্যগুলো কতটা ঠিক, তা নিয়ে সংশয়ে তদন্তকারীরা। তৃণমূল কাউন্সিলরের উপর হামলার নেপথ্যে আরও কেউ রয়েছেন কি না, খোঁজ চলছে। খোঁজা চলছে জনৈক ইকবাল এবং যুবরাজের দুই সঙ্গীর।

অন্য দিকে, শুক্রবার রাতের ঘটনার পরে সুশান্তের নিরাপত্তা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে গার্ডরেল দেওয়া হয়েছে শনিবার। আগে সুশান্তের নিরাপত্তার জন্য কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের দুই নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। এ বার নিরাপত্তা দ্বিগুণ করছে পুলিশ। সুশান্ত জানিয়েছেন, তাঁকে খুনের চেষ্টার পর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব উদ্বিগ্ন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে তাঁর খোঁজ নিয়েছেন। একে একে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস কুমারের সঙ্গে কথা হয়েছে সুশান্তের। তৃণমূল কাউন্সিলর বলেন, ‘‘দল এবং নেতৃত্ব আমার পাশে আছেন। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’

kasba tmc councillor Kolkata Police TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy