প্রতীকী চিত্র।
ঠিক যেন সিনেমার দৃশ্য! শহরের জনবহুল রাস্তায় হাত দেখিয়ে পাচারকারীকে গাড়ি দাঁড় করাতে বললেন অফিসারেরা। কিন্তু, চালক বেগতিক দেখে গতি বাড়িয়ে সাড়ে তিন কোটি টাকার চোরাই সোনা নিয়ে পালাতে শুরু করল। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঙুর অ্যাভিনিউয়ের ডি ব্লকের সামনে ভিআইপি রোডের দিক থেকে আসা ওই সাদা এসইউভি-কে গতি বাড়িয়ে চলে যেতে দেখে গাড়ি নিয়ে পিছনে ধাওয়া করলেন ‘ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স’ (ডিআরআই)-এর অফিসারেরা। কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরের গোয়েন্দা বিভাগ এটি। তাঁদের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল, ওই সাদা গাড়িতে করে চোরাই সোনা পাচার হচ্ছে।
চালক অবশ্য বেশি দূর যেতে পারেনি। বাঙুর অ্যাভিনিউ এবং যশোর রোডের মুখে গিয়ে আটকে যায় সেই গাড়ি। ডিআরআই অফিসারেরা নেমে ঘিরে ধরেন সেটি। কাছেই বাঙুর অ্যাভিনিউয়ে বাড়ি বিক্রম ঝুনঝুনওয়ালা নামে ওই চালকের। গাড়িটিও তারই। মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ি তল্লাশি করতে গেলে অন্য ধরনের সমস্যা হতে পারে ভেবে অফিসারেরা গাড়ি সমেত বাড়িতেই নিয়ে যান তাকে।
বাড়ির সামনে দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চালানো হয় ওই গাড়িতে। ভিতর থেকে পাওয়া যায় ৪২টি সোনার বিস্কুট। ৬ কেজি ৮৮২ গ্রাম সেই সোনার বাজারদর ৩ কোটি ৬২ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা বলে ডিআরআই জানিয়েছে। এ ছাড়াও ওই গাড়ির ভিতর থেকে ৫৩ লক্ষ টাকা নগদও পাওয়া যায়।
প্রাথমিক জেরার মুখে বিক্রম জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে আসা ওই চোরাই সোনা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রির কারবার বেশ কয়েক বছর ধরেই করছে সে। এই কাজে তার বাবা ও অফিসের এক কর্মীও জড়িত। যে ৫৩ লক্ষ টাকা নগদ গাড়িতে ছিল, তা চোরাই সোনা বিক্রি করেই পেয়েছিল সে।
এর পরে বিক্রমকে সঙ্গে নিয়ে বড়বাজারে তার দু’টি অফিসে হানা দেওয়া হয়। সেখান থেকে যথাক্রমে আরও ৩৪ লক্ষ ২৩ হাজার এবং ৯৩ হাজার টাকা নগদ পাওয়া যায়। সেই টাকাও সোনা বিক্রি করে পাওয়া বলে ডিআরআই জানিয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, নগদ টাকা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সেখান থেকে সোনা চোরাই পথে ভারতে নিয়ে আসত বিক্রম। কলকাতার বড়বাজারে
বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে সেই সোনা সে বিক্রি করত। বিক্রম, তার বাবা এবং ওই কর্মীকে গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে তোলা হয়েছে। তিন জনকেই জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy