Advertisement
E-Paper

মশার আঁতুড় বাগুইআটিও, দায় নিয়ে চাপান-উতোর

এলাকার মানুষ জায়গাটাকে বলেন ডিপোর মাঠ। সেই ডিপোর মাঠ এখন কার্যত মশার আঁতুরঘর। অথচ সে দিকে তেমন নজরই নেই বিধাননগর পুর নিগমের!

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৬
মশার চাষ এখানেই। শৌভিক দে-র তোলা ছবি।

মশার চাষ এখানেই। শৌভিক দে-র তোলা ছবি।

এলাকার মানুষ জায়গাটাকে বলেন ডিপোর মাঠ। সেই ডিপোর মাঠ এখন কার্যত মশার আঁতুরঘর। অথচ সে দিকে তেমন নজরই নেই বিধাননগর পুর নিগমের!

এক সময়ে ওই মাঠে শুরু হয়েছিল স্টেডিয়াম তৈরির কাজ। তার জন্য গর্ত খোঁড়া হয়েছিল। অভিযোগ, সেই গর্তেই এখন ডেঙ্গিবাহী মশার চাষ। নিশ্চিন্তে ডিম পাড়ছে মশা। লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ হয়ে উড়ে যাচ্ছে বাগুইআটির বিভিন্ন এলাকায়। তবে শুধু পুরসভাই নয়, অভিযোগের আঙুল উঠতে পারে এলাকার মানুষের দিকেও। কারণ, তাঁরাই ডিপোর মাঠে ফেলে যাচ্ছেন আবর্জনা। সেই স্তূপে প্লাস্টিক-কাগজ-থার্মোকলের কাপ, আধভাঙা পোর্সেলিনের বাটিতে জমে আছে বৃষ্টির জল। তাতেই থিক থিক করছে মশার লার্ভা।

কিছু দিন আগেই ডিপোর মাঠে জঙ্গল কেটে আবর্জনা সাফ করেছিল বিধাননগর পুরসভা। কিন্তু মানুষের জঞ্জাল ফেলার অভ্যাস পাল্টায়নি। বন্ধ হয়নি স্টেডিয়ামের জন্য খোঁড়া গর্তও। মশার বংশবৃদ্ধির এই অনুকূল পরিস্থিতির সৌজন্যে বাগুইআটি ও সংলগ্ন এলাকায় থামেনি ডেঙ্গির মৃত্যু মিছিল। এখনও ঘরে ঘরে জ্বরের রোগী। স্থানীয় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শম্পা চক্রবর্তী এর দায় চাপাচ্ছেন এলাকার নাগরিকদের উপরেই। তাঁর দাবি, ‘‘বারবার বলা সত্ত্বেও নাগরিকেরা ডেঙ্গি নিয়ে সচেতন হচ্ছেন না। পুজোর ঘরে, ছাদে, বাড়ির টবে জল জমিয়ে রাখছেন। এটাও ঠিক নয়।’’ কিন্তু মশার আঁতুরঘর নষ্ট করতে পুরসভার কর্মীরা সক্রিয় হচ্ছেন না কেন? শম্পাদেবী বলেন, ‘‘ভিতরের গর্তগুলিতে কেন তেল ছড়ানো হচ্ছে না, তা দেখছি।’’

ডিপোর মাঠই যে শুধু ডেঙ্গির মশার আঁতুরঘর, তা কিন্তু নয়। বাগুইআটি মোড়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনারের অফিসের পিছনেও একই হাল। বাইরে থেকে জায়গাটা দেখা যায় না। স্থানীয় এক বাসিন্দা নিয়ে গেলেন পুলিশ অফিসের পিছন দিকে। এক সময়ে সেখানে সিনেমা হলের সাইকেল স্ট্যান্ড ছিল। এখন এবড়োখেবড়ো জমিতে জল জমে রয়েছে। তাতে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, রাস্তার উপরে পুরকর্মীরা ব্লিচিং পাউডার আর তেল ছড়িয়ে যান মাধেমধ্যে। কিন্তু মশার চাষের এই আসল জায়গাটা এড়িয়ে যান তাঁরা।

অপরিকল্পিত প্রোমোটিং এর জেরে এমনিতেই রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার বহু জায়গায় নিকাশি ব্যবস্থা বলে কিছু নেই বললেই চলে। তাই ওই এলাকায় অনেক জায়গাতেই এক বার জল জমলে তা সহজে নামতে চায় না। দীর্ঘদিন ধরে জল দাঁড়িয়ে থাকে। সেই জল সরানোর দায়িত্ব নিয়ে আবার ঠেলাঠেলি চলছে লাগোয়া দুই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের মধ্যে। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপ বাগুই জানান, জায়গাটি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাসবী দত্তের পাল্টা দাবি, জায়গাটি ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। ফলে কাজ করবে কে, তা নিয়ে বিভ্রান্ত এলাকার মানুষ।

মশার আঁতুরঘর আছে আরও। ভিআইপি রোডের ধারে ৪৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে পূর্ত দফতর কাজ করেছিল। তার পর থেকে জায়গাটি ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেখানেই জমছে জল। আশপাশের কয়েক জন বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্তও হয়েছেন বলে অভিযোগ।

Malaria Baguihati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy