Advertisement
E-Paper

Bank: সহকর্মীর দেহ নিয়ে বিক্ষোভ ব্যাঙ্কের সামনে

ব্যস্ত সময়ে কিছুটা যানজট তৈরি হয়। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং এক জনকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৫০
প্রতিবাদ: গাড়িচালকের মৃতদেহ নিয়ে ব্যাঙ্কের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ সহকর্মীদের। বুধবার, বি বা দী বাগে।

প্রতিবাদ: গাড়িচালকের মৃতদেহ নিয়ে ব্যাঙ্কের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ সহকর্মীদের। বুধবার, বি বা দী বাগে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গাড়িচালকের মৃত্যুতে বিক্ষোভে বসলেন তাঁর সহকর্মীরা। অভিযোগ উঠেছে, ওই গাড়িচালক ব্যাঙ্কের যে কর্তার অধীনে চাকরি করতেন, সেই ব্যাঙ্ককর্তা তাঁর অসুস্থতার খবর শুনেও চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা করেননি। মৃতের সহকর্মীদের আরও অভিযোগ, ওই ব্যাঙ্কের অন্য কর্তাদের থেকে সাহায্য চাইতে গেলেও মেলেনি। অবশেষে এসএসকেএমে ওই চালকের মৃত্যু হয়। বুধবার তাঁর দেহ নিয়ে বি বা দী বাগে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভে বসেন সেখানকার অন্য গাড়িচালকেরা।

এর জেরে ব্যস্ত সময়ে কিছুটা যানজট তৈরি হয়। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং এক জনকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে। বছর সাতচল্লিশের মৃত চালকের নাম বব্বন সিংহ। বব্বনের পরিবার আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে হাওড়ার খগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় লেনে থাকে। তাঁর পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী, দুই পুত্র ও বছর বাইশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক মেয়ে। বব্বনের স্ত্রী পুষ্পা জানান, তাঁর স্বামী ১৬ বছর ধরে ওই ব্যাঙ্কে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মহিলা বলেন, ‘‘বাড়ি গেলে যদি করোনা নিয়ে কাজে ফেরে! তাই ওর বড় কর্তা দেড় বছর ধরে স্বামীর বাড়ি আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আলিপুরে ব্যাঙ্কের যে আবাসনে ওই কর্তা পরিবার নিয়ে থাকেন, তার নীচের একটি ঘরে ওকে থাকতে দেওয়া হয়।’’

ওই ব্যাঙ্কের অন্য এক কর্তার গাড়িচালক ইন্দ্রনীল মণ্ডল বলেন, ‘‘বব্বন প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটের মধ্যে তৈরি হয়ে গাড়ির কাছে পৌঁছে যেতেন। মঙ্গলবার ন’টা বেজে গেলেও তাঁকে বেরোতে না দেখে ডাকতে যাই। বহুক্ষণ ডাকার পরে কোনও মতে দরজা খুলেই মাটিতে পড়ে যান। অবস্থা ভাল নয় বুঝে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তাঁর চালকের যে এই অবস্থা, জানানো হয় ওঁর বাবুকে। কিন্তু তিনি অফিসে চলে যান।’’

ইন্দ্রনীল বলেন, এসএসকেএম বব্বনের শারীরিক পরীক্ষা করে জানায়, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। শয্যা নেই জানিয়ে তাঁকে এম আর বাঙুরে রেফার করা হয়। এসএসকেএম থেকে বেরোনোর মুখেই ফের খিঁচুনি হয় বব্বনের। ঘুরে এসএসকেএমে ঢুকলে জানানো হয়, রোগীকে আইসিইউ-তে রাখতে হবে। কিন্তু শয্যা ফাঁকা নেই। আরেক সহকর্মী ধনেশ বর্মণের কথায়, ‘‘আমরা ব্যাঙ্কের বড় কর্তাদের কাছে ছুটি। ব্যাঙ্কের সঙ্গে বহু বেসরকারি হাসপাতালের চুক্তি থাকে। কোথাও যদি আইসিইউ-তে ভর্তি করানো যায়, সেই অনুরোধ জানাই। সাহায্য পাইনি। রাত সাড়ে আটটায় এসএসকেএমেই সব শেষ হয়ে যায়।’’

এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের দাবি, শয্যা থাকলে কোনও রোগীকেই ফেরানোর প্রশ্ন ওঠে না। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে খোঁজ নিতে হবে। ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গাড়ির অস্থায়ী চালকদের অ্যাসোসিয়েশনের নেতা শান্তি ঘোষের মন্তব্য, ‘‘কোনও কর্তার তরফে তাঁর গাড়িচালকের প্রতি এমন অমানবিক ব্যবহার ভাবা যায় না!’’

অভিযুক্ত এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর (১) অজয় ব্যাসের যুক্তি, ‘‘কাজ থাকলে অফিস যাব না! তা ছাড়া সমস্ত চেষ্টাই করা হয়েছে। এসএসকেএম তো কলকাতার সেরা হাসপাতাল। সেখানে না বাঁচলে কোথায় বাঁচবে?’’

bank Protest dead body
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy