Advertisement
E-Paper

ফলকে আটকে ঐতিহ্য, ধুঁকছে পাঠাগার

কলকাতায় থাকাকালীন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজের কাছেই কলেজ স্ট্রিটের প্রতাপ চন্দ্র স্ট্রিটের একটি বাড়িতে থাকতেন।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৮ ০২:৪০
অনাদর: পাঠাগারের সামনে চলছে জামাকাপড় শুকোনো। (ইনসেটে) সেই ফলক। ছবি: সুদীপ ঘোষ

অনাদর: পাঠাগারের সামনে চলছে জামাকাপড় শুকোনো। (ইনসেটে) সেই ফলক। ছবি: সুদীপ ঘোষ

এক দশকেরও বেশি আগে জরাজীর্ণ বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। তার জায়গায় মাথা তুলেছিল ওই বাড়ির মালিকের নামাঙ্কিত পাঠাগারটি। বঙ্কিমচন্দ্র স্মৃতি গ্রন্থাগার। ২০০৬ সালে উদ্বোধন হয় সেটি। এরই মধ্যে তার গায়ে অবহেলার ছাপ স্পষ্ট।

কলকাতায় থাকাকালীন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজের কাছেই কলেজ স্ট্রিটের প্রতাপ চন্দ্র স্ট্রিটের একটি বাড়িতে থাকতেন। জরাজীর্ণ সেই বাড়িটি বেশ কয়েক বছর আগেই ভেঙে ফেলা হয়েছে। আর কোনও অস্তিত্বই নেই বাড়িটির। ইতিহাস জানাতে রয়ে গিয়েছে একটি ফলক। সেই জমিতে পাঁচ নম্বর প্রতাপ চন্দ্র স্ট্রিটের উপরে মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়িয়ে বঙ্কিমচন্দ্র স্মৃতি গ্রন্থাগার। এ বার সাহিত্য সম্রাটের স্মৃতিরক্ষার উদ্যোগ শুরু হয়েছে সেখানে।

এমনিতেই বই পড়ার রেওয়াজ আগের তুলনায় কমে যাওয়ায় পাঠাগারের জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে। পরিকল্পনাহীন ভাবে তৈরি হওয়ায় বঙ্কিমচন্দ্রের নামাঙ্কিত পাঠাগারটিও তাই শুরু থেকেই ধুঁকছিল। প্রতাপ চন্দ্র স্ট্রিটের সরু গলি দিয়ে ঢুকলে দেখা যাবে দোতলা পাঠাগারটি। উপরের সেমিনার হলের মেঝের টাইলস ভেঙে গিয়েছে। চার দিকে অযত্নের ছাপ। পাঠকও যথারীতি নামমাত্র। পাঠাগারে প্রবেশপথের ফলকটি দেখলে একমাত্র বোঝা যায়, কোনও এক সময়ে এখানেই ছিল বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দা অনিমেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফলকটি না দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এই ঠিকানায় বঙ্কিমচন্দ্র অনেক দিন থেকেছেন।’’ যদিও বাসিন্দার প্রশ্ন, বঙ্কিমচন্দ্রের মূল বাড়িটি কেন যথাযথ সংরক্ষণ করা হল না? বাড়িটি থাকলে সাধারণ মানুষ ও পর্যটকেরা জানতে পারতেন, কেমন ছিল সেটি।

গ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান দেবাশিস গুপ্ত বলেন, ‘‘বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়িটি এতটাই জীর্ণ হয়ে গিয়েছিল যে তা ভেঙে ফেলতে হয়। নতুন ভবনটি তৈরি হয় ২০০৪ সালে। পাঠাগারের উদ্বোধন হয় ২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। এই পাঠাগারেই বঙ্কিমের স্মৃতিবিজড়িত কিছু জিনিস রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’

বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতিরক্ষা নিয়ে অনুরাগীদের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে পাঠাগারটি নতুন করে সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন পাঠাগার কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্রের ব্যবহার করা জিনিসও রাখা হবে সেখানে। বই পড়া ছাড়াও পাঠাগারে ঘুরতে আসতে পারবেন পর্যটকেরাও। দেবাশিসবাবু জানান, প্রতি জেলায় চারটি পাঠাগারকে মডেল হিসেবে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এ জন্য কলকাতার যে চারটি পাঠাগারকে বেছে নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে এই বঙ্কিম পাঠাগার। পাঠাগারের সেমিনার হল, রিডিং রুম নতুন করে সাজানো হচ্ছে, থাকছে ছোটদের বিভাগ। কয়েকটা কম্পিউটারও আনা হয়েছে। মডেল পাঠাগারগুলোতে বছরে ৫২টি অনুষ্ঠান করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতো বঙ্কিমচন্দ্রের জীবন ও কাজের নানা দিক তুলে ধরে এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানও করা হবে।

Bankim Chandra Memorial Library Government negligence পাঠাগার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy