Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Behala

Behala Murder Case: লুট করতেই কি জোড়া খুন, উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা

গত ৬ সেপ্টেম্বর পর্ণশ্রীর সেনপল্লিতে গলা কেটে খুন করা হয় সুস্মিতা মণ্ডল ও তাঁর ছেলে তমোজিৎ মণ্ডলকে।

টাকার লোভেই খুন? ফাইল ছবি।

টাকার লোভেই খুন? ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:৪১
Share: Save:

পাঁচ হাজার টাকা ধার না দেওয়ায় লুটের উদ্দেশ্যেই খুন, না কি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য? পর্ণশ্রীতে মা-ছেলেকে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আপাতত সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। ওই ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় দাস ও সন্দীপ দাসকে সোমবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছিল। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
গত ৬ সেপ্টেম্বর পর্ণশ্রীর সেনপল্লিতে গলা কেটে খুন করা হয় সুস্মিতা মণ্ডল ও তাঁর ছেলে তমোজিৎ মণ্ডলকে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রবিবার সঞ্জয় ও সন্দীপকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। জানা যায়, তারা সম্পর্কে সুস্মিতার মাসতুতো ভাই। পর্ণশ্রীর ফ্ল্যাটে ঘন ঘন যাতায়াত ছিল তাদের। পুলিশের দাবি, ধর্মতলার একটি শপিং মলে সিসি ক্যামেরা দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা সঞ্জয়ই খুনের পরিকল্পনা করেছিল। জেরায় ওই অভিযুক্ত জানিয়েছে, সুস্মিতার কাছে পাঁচ হাজার টাকা ধার চেয়ে না পাওয়ায় লুটের উদ্দেশ্যে সে তাঁকে খুন করে। কিন্তু তার পরেও যে প্রশ্নটা গোয়েন্দাদের ভাবাচ্ছে তা হল, খুনের একমাত্র কারণ কি এটাই? পাশাপাশি খুনের ঘটনায় ভাই কেন দাদাকে সাহায্য করল, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সন্দীপ দাবি করেছে, তার দাদার বহু টাকা দেনা হয়ে যাওয়ায় সংসারে অনটন চলছিল। তাই ধার শোধ হলে সংসারের হাল ফিরবে, এই আশায় সে দাদাকে সাহায্য করতে রাজি হয়। তবে অভিযুক্তের এই দাবি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। খুনের পিছনে অন্য কারণও থাকতে পারে বলে মনে করছেন লালবাজারের পুলিশকর্তাদের একাংশ। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, নিজের এক আত্মীয়ের মারা যাওয়ার কথা বলে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিল সঞ্জয়। যদিও তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, যাঁর মারা যাওয়ার কথা বলে সঞ্জয় ছুটি নিয়েছিল, তিনি বছর দেড়েক আগেই মারা গিয়েছেন।
তদন্তে উঠে এসেছে, সঞ্জয় প্রায়ই মদ্যপান করত। সুস্মিতা ও তমোজিৎকে খুন করার পরে ফ্ল্যাটের ভিতরেই নিজেদের রক্তমাখা পোশাক বদলে নিয়েছিল দুই ভাই। ধৃতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সুস্মিতার স্বামী ও বাবা। সুস্মিতার স্বামী তপন মণ্ডল এ দিন বলেন, ‘‘নিজের দিদিকে কেউ এ ভাবে খুন করতে পারে? ওদের কঠোর শাস্তি চাই।’’

তবে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র এবং লুট হওয়া সোনার গয়না এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ধৃতদের এ দিন আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে হাজির করা হয়। সরকারি আইনজীবী শুভাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটি নৃশংস খুনের ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, টাকা না পেয়ে নিকটাত্মীয়া দিদি এবং তার ১৩ বছরের ছেলেকে গলার নলি কেটে খুন করা হয়েছে। ধৃতদের কঠোরতম সাজার জন্য পুলিশি হেফাজতের প্রয়োজন।’’ তা শুনে বিচারক সুতীর্থ বন্দোপাধ্যায় সঞ্জয় ও সন্দীপকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজত দেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া কয়েকটি জিনিসের ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য এ দিন পুলিশের তরফে আদালতে আর্জি জানানো হয়েছিল। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Behala Double Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE