বিকেলবেলা পাড়ায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। হঠাৎ খেয়াল করলেন, পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল একটি মোটরবাইক। একটু দূরে গিয়েই ফিরে বাইকটি ফিরে এগিয়ে এল তাঁর দিকে। রাস্তার পাশে সরে যাওয়ার আগেই বৃদ্ধা টের পেলেন, হ্যাঁচকা টানে তাঁর গলা থেকে সোনার হার ছিনিয়ে নিল বাইকের পিছনের সিটে বসে থাকা যুবক।
সোমবার সার্ভে পার্ক থানার মডার্ন পার্কে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পরে স্থানীয় থানার পুলিশ এবং লালবাজারের গোয়েন্দারা তদন্তে নামলেও রাত পর্যন্ত অবশ্য কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, লেক ইস্ট রোডের বাসিন্দা ছায়া চট্টোপাধ্যায় চিকিৎসকের পরামর্শে প্রতি দিনই সান্ধ্য ভ্রমণে বেরোন। এ দিনও বিকেলে বাড়ির পাশে মডার্ন পার্কের রাস্তা ধরে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন তিনি। ছায়াদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, মোটরবাইকটি অনেকক্ষণ ধরেই তাঁর আশপাশে ঘোরাফেরা করছিল। এক বার তাঁর পাশ দিয়ে বেরিয়েও যায় সেটি। তার পরে ফিরে এসে গলার সোনার হারটি ছিনিয়ে নিয়ে পালায়। ছায়াদেবীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শারীরিক ভাবে তেমন কোনও চোট না লাগলেও, এ দিনের ঘটনায় তাঁর মধ্যে ‘ট্রমা’ তৈরি হয়েছে।
ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে ঘাবড়ে গেলেও পরে চিৎকার শুরু করেন ছায়াদেবী। তাঁর চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন চলে আসেন। খবর যায় থানায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ। পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা ছক কষেই ছিনতাই করেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধার বিবরণ শুনে মোটরবাইক আরোহীদের ছবি আঁকানো হচ্ছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, যেখানে ছিনতাই হয়, সেই জায়গাটি বেশ নির্জন। ওই এলাকারই অন্য এক পার্কে এর আগেও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে পুলিশি পাহারাও বসানো হয়েছিল। দিন কয়েক আগে মডার্ন পার্কেরই একটি ফাঁকা বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনাতেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশের একাংশ অবশ্য এই ঘটনার পিছনে অন্য কারণ দেখছেন। তাঁরা বলছেন, বছর দুই আগে কলকাতা জুড়ে একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনা শুরু হয়েছিল। এমনকী, দক্ষিণ কলকাতার একাধিক জায়গায় ছিনতাই করতে এসে গুলিও ছুড়েছিল দুষ্কৃতীরা। তার পরে প্রশ্ন উঠেছিল লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের দক্ষতা নিয়েও। যদিও লালবাজারের কর্তাদের দাবি, সেই ঘটনার পরে শহর জুড়ে তল্লাশি-হানা চালান ছিনতাই-দমন শাখার অফিসারেরা। ফলে শহরে কিছুটা হলেও ছিনতাইবাজদের দাপট কমেছিল। তবে ছিনতাই করতে এসে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যাওয়া দুষ্কৃতীদের ধরতে পারেনি লালবাজার।
মে-জুন মাসেই কলকাতা পুলিশ এলাকায় পাঁচটি ছিনতাই হয়েছে। খাতায়-কলমের হিসেবে দু’মাসে পাঁচটি ছিনতাই কম হলেও লালবাজারের গোয়েন্দাদের অনেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। পুলিশের একাংশের অনুমান, ইদানীং কিছু ছিনতাইবাজ জেল থেকে ছাড়া পাওয়াতেই ফের ছিনতাই শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy