Advertisement
E-Paper

অন্ধকার পথে গর্তে বাইক, মৃত্যু চালকের

ইএম বাইপাসে বাঘা যতীন উড়ালপুলের পশ্চিম প্রান্তে, নীচে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত একটি রাস্তা আছে। রাস্তার পাশেই সার্ভে পার্ক থানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:১৯
বিপজ্জনক: রাস্তার এই গর্তে পড়েই উল্টে গিয়েছিল প্রবীর দাসের(ইনসেটে) বাইক। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

বিপজ্জনক: রাস্তার এই গর্তে পড়েই উল্টে গিয়েছিল প্রবীর দাসের(ইনসেটে) বাইক। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

বন্ধুকে নামিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। মাথায় হেলমেট। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শহরের প্রায়ান্ধকার রাস্তায় আচমকা গর্তে পড়ে ছিটকে গেল বাইক। হেলমেট মাথায় বেকায়দায় উপুড় হয়ে পড়ে মৃত্যু হল ৩৭ বছরের প্রবীর দাসের। গড়িয়াহাটের ফুটপাতে তাঁর শাড়ি-জামাকাপড়ের দোকান। বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, বোন, স্ত্রী ও সাড়ে চার বছরের মেয়ে।

ইএম বাইপাসে বাঘা যতীন উড়ালপুলের পশ্চিম প্রান্তে, নীচে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত একটি রাস্তা আছে। রাস্তার পাশেই সার্ভে পার্ক থানা। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় দু’টো নাগাদ ওই প্রায়ান্ধকার রাস্তায় যখন বাইক থেকে প্রবীর ছিটকে পড়েন, তখন বৃষ্টি হচ্ছে। আশপাশে লোকজন নেই। সে সময়ে এক মহিলা ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনিই প্রথম ঘটনাটি দেখে ১০০-তে ডায়াল করেন। কিছু ক্ষণ পরে একটি খাবার সরবরাহকারী অ্যাপের দুই কর্মী সেখান দিয়ে বাইকে ফিরছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা প্রবীরকে ওই অবস্থায় দেখে আবার ১০০-তে ডায়াল করেন এবং সার্ভে পার্ক থানায় ছুটে যান। পুলিশকর্মীরা প্রবীরকে উদ্ধার করে কাছেই পিয়ারলেস হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। প্রবীরের মোবাইল থেকে বাড়ির নম্বর পেয়ে খবর দেওয়া হয়।

শুক্রবার দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা গেল, গোটা রাস্তা মসৃণ। কোথাও এতটুকু গর্ত নেই। উড়ালপুলের দেওয়াল লাগোয়া পরপর দোকান। একেবারে শেষে ৬৪ নম্বর দোকানের উল্টো ফুটপাতে রয়েছে সিইএসসি-র একটি ট্রান্সফর্মার। প্রায় ১৫ ফুট চওড়া রাস্তায় ওই ট্রান্সফর্মারের সামনে খানিকটা জায়গা কাটা। দেড় ফুট চওড়া ওই কাটা অংশটি চলে গিয়েছে রাস্তার অন্য প্রান্ত পর্যন্ত। স্থানীয় দোকানদারেরা জানিয়েছেন, এক মাসেরও বেশি আগে সেখানে রাস্তা কেটে কাজ করেছিলেন সিইএসসি-র কর্মীরা। তার পর থেকে ওই ভাবেই পড়ে আছে কাটা অংশটুকু। জল জমে আয়তন বেড়েছে গর্তের। রাস্তায় স্পিডব্রেকার হিসেবে কাজ করে সেই অংশ। মাঝেমধ্যেই সেখানে উল্টে যায় বাইক।

রাস্তায় পড়ে রয়েছেন প্রবীর। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

সিইএসসি-র এক কর্তার দাবি, পরিকল্পনামাফিক কোনও রাস্তায় কাজ করার আগে পুরসভাকে অগ্রিম টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। ফলে কেব্‌ল বসানো বা মেরামতির জন্য যে রাস্তা সিইএসসি-র কর্মীরা কাটছেন, তা সারানোর দায়িত্ব পুরসভার। কোনও জরুরি কারণে রাস্তা কাটতে হলেও তার জন্য টাকা নেয় পুরসভা। ফলে দায়িত্ব তাদের উপরেই বর্তায়।

আরও পড়ুন: পরিস্রুত পানীয় জলের জোগানে টালার পরেই গার্ডেনরিচ

এত দিনেও কাটা অংশটি সারানো হল না কেন? ওই এলাকা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন ধরেননি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও জবাব দেননি।

এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে শুক্রবার প্রবীরের দেহ তুলে দেওয়া হয় আত্মীয়দের হাতে। ওই যুবকের মামাতো ভাই অমিত আরি জানান, বৃহস্পতিবার গড়িয়াহাটের ব্যবসায়ীদের আয়োজনে তারা মা-র পুজো হচ্ছিল।

আরও পড়ুন: যৌন হেনস্থায় ধৃত সহপাঠী, পরে জামিন

পুজো শেষে আর এক ব্যবসায়ী-বন্ধু মানস নায়েককে তাঁর বাড়িতে নামিয়ে বাঘা যতীনের ফ্ল্যাটে ফিরছিলেন প্রবীর। হেলমেট পরা ছিল। সাধারণত কলকাতা পুলিশের সার্জেন্টরা যে ধরনের সাদা হেলমেট পরেন, সে রকমই হেলমেট ছিল প্রবীরের মাথায়। সামনের দিকটা খোলা। এই ধরনের আইএসআই ছাপ মারা হেলমেট কতটা সুরক্ষিত, প্রবীরের দুর্ঘটনার পরে সেই প্রশ্ন তুলেছেন অমিতেরাই।

Death Accident CESC KMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy