নবান্নের নীলবাড়ি দখলের লক্ষ্যে একদা দিদির স্নেহের কাননের ওপরেই আস্থা রাখল বিজেপি। রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাক্ষর করা একটি নিয়োগপত্র প্রকাশ্যে আসে। সেই নিয়োগপত্রে বিজেপির সাংগঠনিক কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। সঙ্গে ওই কমিটির সহ আহ্বায়ক করা হয়েছে তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আহ্বায়ক হয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন যুবমোর্চার সভাপতি দেবজিৎ সরকার।
বৈশাখী ছাড়াও সহ আহ্বায়ক হয়েছেন রাজ্য যুবমোর্চার সহসভাপতি শঙ্কুদেব পন্ডা। কলকাতায় ১১টি, দমদম লোকসভার অধীন ৭টি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি বিধানসভা নিয়ে বিজেপির সাংগঠনিক কলকাতা জোনের দায়িত্ব দেওয়া হল বেহালা পূর্বের বিধায়ককে। ২০১৯ সালের ১৪ অগস্ট দিল্লিতে গিয়ে জেপি নড্ডার হাত ধরে বৈশাখীকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন। তারপর নানা বির্তকের কারণে বিজেপির পক্ষে সক্রিয় হননি তিনি। গত বছর ভাইফোঁটার দিন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে ফোঁটা নিয়ে ঘর ওয়াপসির ইঙ্গিত দেন। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলেও ফেরা হয়নি শোভনের। বিজেপির বিজয়া সম্মেলনীতে বৈশাখীকে আমন্ত্রণ না জানানোয় গোঁসা করে শোভনও আসেননি।
নভেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কলকাতা সফরের সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করেন শোভন। সেই সময়ই ইঙ্গিত মিলেছিল রাজ্য রাজনীতির আঙ্গিনায় ফের সরব হবেন প্রাক্তন মেয়র। কিন্তু রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা যায়, আবারও নেতৃত্বের সঙ্গে সমস্যা হয়েছে শোভন-বৈশাখীর। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যায় তাঁর নিয়োগপত্র প্রকাশ্যে আসতেই শোভনের গেরুয়া শিবিরের হয়ে রাজনীতির ময়দানে নামার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। ঘটনাচক্রে যে কলকাতা জোনের দায়িত্ব শোভনকে দেওয়া হয়েছে, তৃণমূলে থাকাকালীন সেই অংশের দায়িত্ব ছিল তাঁর হাতেই। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে কলকাতার ১১টি আসন তো বটেই, শোভনের নেতৃত্বেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি আসনের মধ্যে ২৯টিতে জয় পেয়েছিল জোড়াফুল শিবির। একুশের ভোটে শোভনের হাতে সেই সমস্ত এলাকার দায়িত্বই তুলে দিল বিজেপি।