Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Madhyamik

Madhyamik 2022: অনুলেখকের অনুমতি পেতে ছুটছে কালঘাম

অতি কষ্টে অনুলেখক জুটলেও অনুমতিপত্র পেতে চূড়ান্ত হয়রান হতে হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২২ ০৫:২৯
Share: Save:

আগামী কাল, সোমবার শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু তার ৪৮ ঘণ্টা আগেও অনেক দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থী অনুলেখকের (রাইটার) অনুমতিপত্র হাতে পায়নি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনিশ্চয়তায় ভুগতে হচ্ছে তাদের।

হয়রানির ছবিটা একই রকম অন্যান্য ‘বিশেষ’ পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও। সহায়ক সংক্রান্ত অনুমতিপত্রের জন্য শনিবার সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন বিদ্যালয় প্রতিনিধি অথবা সশরীরে আসা পরীক্ষার্থীরা। অথচ ডিসেম্বর থেকে এ নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন বেহালা, উত্তরপাড়া, হলদিয়া, নবদ্বীপ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন দৃষ্টিহীন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

নবদ্বীপের এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাসুদেব চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার রাতেই কলকাতায় পৌঁছন, যাতে তাড়াতাড়ি অনুমতিপত্র নিয়ে নবদ্বীপে ফিরতে পারেন। তিনি জানান, দুপুর সওয়া ২টো নাগাদ তাঁর স্কুলের ন’জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র এক জনের অনুমতিপত্র পেয়েছেন। তাঁকে বলা হয়, বাকিগুলি সন্ধ্যা ৬টার পরে পাওয়া যাবে। শুরু হয় ফের অপেক্ষা।

পরীক্ষার্থীর পাশে বসে শুনে উত্তর লেখে নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা। তাদের নাম নথিভুক্ত করিয়ে পর্ষদের অনুমতি নিতে হয়। করোনা-পরবর্তী সময়ে ‘রাইটার’ বা অনুলেখক হিসেবে কাজ করতে অনেকেই রাজি হননি। ফলে অনুলেখক পেতে কালঘাম ছুটেছে স্কুলগুলির। অতি কষ্টে অনুলেখক জুটলেও অনুমতিপত্র পেতে চূড়ান্ত হয়রান হতে হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে।

নবদ্বীপ এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং রাজ্য প্রতিবন্ধী সংগঠনের সদস্য বাসুদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের সব ক’টি দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়ের তরফে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। মাধ্যমিকে হোম সেন্টারের অনুমতি দেওয়া হোক। একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের অনুলেখক হিসেবে নেওয়ার অনুমতিও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাড়া পাইনি।”

নবদ্বীপ ছাড়াও রাজ্যের আরও তিনটি স্কুল ‘ক্যালকাটা ব্লাইন্ড স্কুল’, ‘লাইট হাউস ফর দ্য ব্লাইন্ড’ এবং হুগলির ‘লুইস ব্রেল মেমোরিয়াল স্কুল ফর দ্য সাইটলেস’-এর তরফে একই আবেদন করা হয়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে। অভিযোগ, অনুলেখকদের সঙ্গে ন্যূনতম বোঝাপড়া গড়ে না উঠলে কী করে পরীক্ষা দেবে দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা, সেটা কেউ ভাবছে না। হোম সেন্টার না হওয়ায় কৃষ্ণনগর থেকে প্রতিদিন নবদ্বীপে এসে পরীক্ষা দিতে হবে পার্বতী টুডু বা জয়িতা দাসকে। কাউকে হয়তো হোটেল ভাড়া করতে হবে। বাসুদেব বলেন, “জানি না, অনুমতিপত্র নিয়ে এই টানাপড়েন কেন। অতিমারিতেও মানবিক ভাবে দেখা হল না ওদের।’’ তিনি বলেন, ‘‘নরেন্দ্রপুরের মতো স্কুলে, যাদের একটি ক্যাম্পাসের মধ্যে একাধিক ভবন, তাদের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের এ সমস্যা নেই। আমাদের মতো স্কুলের পড়ুয়ারা সেই সুবিধা পাচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE