অভয়-আশ্রয়। তাই দূতাবাসে বোমাতঙ্কের পরে পাশের একটি স্কুল থেকে মায়ের কোলে ফেরা। সোমবার। — বিশ্বনাথ বণিক
‘বোমা রাখা আছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটবে,’ এমনই একটি ভুয়ো মেল পেয়ে আতঙ্ক ছড়াল কলকাতার একটি বিদেশি দূতাবাসে। সোমবার সকালে, গড়িয়াহাট থানা এলাকার ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনের তাই দূতাবাসের ঘটনা। তার দু’পাশে রয়েছে শিশুদের দু’টি স্কুল। আতঙ্কে ছুটি দিয়ে দেওয়া হল স্কুলগুলিতেও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল পৌনে দশটা নাগাদ দূতাবাসেরই এক কর্মী একটি ই-মেল দেখে চমকে ওঠেন। অফিসের নিজস্ব মেল আইডি-তে ওই বার্তা এসে পৌঁছয় যাতে বিস্ফোরণের কথা বলা আছে। জানানো হয় উচ্চপদস্থ অফিসারদের।
মেলটি নিয়ে যখন অফিসের ভিতরেই আলোচনা তুঙ্গে, তখনই বেজে ওঠে অফিসের ল্যান্ড ফোন। দূতাবাসের কর্মীরা জানান, ফোন তুলতেই অন্য প্রান্ত থেকে গম্ভীর গলার এক ব্যক্তি নিজেকে গোয়েন্দা (ইন্টেলিজ্যান্স ব্রাঞ্চ) অফিসার বলে পরিচয় দেন। জানতে চান, দূতাবাসে বোমা রাখা আছে বলে কোনও হুমকি মেল এসেছে কি না।
একে হুমকি মেল, অন্য দিকে গোয়েন্দা অফিসারের ফোন পেয়ে ঘাবড়ে যান দূতাবাসের কর্মীরা। সবাই দুদ্দাড় নেমে পড়েন অফিস থেকে। জড়ো আসেন দূতাবাস লাগোয়া জমিতে। খবর যায় থানায়। বম্ব এবং ডগ স্কোয়াডের সাহায্য নিয়ে দূতাবাসের চার তলা বাড়ির পুরোটা প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ধরে তল্লাশি চালান পুলিশ অফিসারেরা। যদিও শেষ পর্যন্ত মেলেনি কিছুই।
দূতাবাসটির বাঁ পাশে সাউথ পয়েন্ট স্কুল আর ডান দিকে মাদারস্ কেয়ার নামে একটি শিশুদের স্কুল। সাউথ পয়েন্টের বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় স্কুল ছুটি থাকলেও অনুষ্ঠানের জন্য কয়েক জন পড়ুয়াকে নিয়ে চলছিল মহড়া। বোমাতঙ্কের খবর পেয়ে দেরি না করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়
ওই পড়ুয়াদের।
কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় মাদারস্ কেয়ার নামে শিশুদের স্কুলটির ক্ষেত্রে। সকাল ন’টায় শিশুকে পৌঁছে দিয়ে অনেকেই চলে যান। বোমাতঙ্কের খবর পেয়ে রাস্তার উল্টো দিকে সমস্ত শিশুকে ওই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মধঘুদেবীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ফোন করে প্রতিটি শিশুর অভিভাবককে জানানো হয় ঘটনার কথা।
নিজেদের কাজ ছেড়ে ছুটে এসেছিলেন কসবার বাসিন্দা শাঁওলি চৌধুরী ও অমিত চৌধুরী। তাঁদের ছেলে অরীনকে স্কুল থেকে নেওয়ার পরে বলেন, ‘‘স্কুলের ফোন পেয়ে প্রথমে বেশ ভয়ই পেয়েছিলাম। ছেলেকে হাতে পেয়ে এখন নিশ্চিন্ত লাগছে।’’ অন্য এক পড়ুয়া ঋষভ দাসের মা মাম্পি দাস জানান, ‘‘খুব উদ্বেগ হচ্ছিল। তবে স্কুলের তরফে যে ভাবে শিশুদের দেখভাল করা হয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসা
করার মতো।’’
এত কাণ্ডের পরেও কে বা কারা ওই ভুয়ো ফোন-মেল করেছিল, রাত পর্যন্ত তা জানতে পারেনি পুলিশ। তাদের বক্তব্য, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy