গানের ভেলায়
গান সাজাবার নেশাতেই কেটে গেল দশটি বছর! সুদীপ্ত চন্দ নিজে সঙ্গীতের ছাত্র, যুক্ত রয়েছেন সঙ্গীত সাংবাদিকতায়। ভাব, কথা আর সুর অনুযায়ী গানগুলি সঠিক ভাবে পরপর সাজিয়ে দেওয়া যথেষ্ট কঠিন এবং গবেষণাধর্মী কাজ সন্দেহ নেই! সারেগামা, টিপস, ইউনিভার্সাল বা টি-সিরিজ— এমন অনেকের জন্যই ভালবেসে কাজ করেছেন তিনি। এ বারে আবার রাহুলদেবের সৃষ্টি থেকে বেছে নেওয়া গান। ২৭ জুন রাহুল দেববর্মনের ৭৬তম জন্মদিবস উপলক্ষে ইনরেকো থেকে এই অডিও সিডিটি প্রকাশিত হবে, সাদার্ন অ্যাভিনিউতে শিল্পীর আবক্ষমূর্তির সামনে।
নেপথ্য দর্শন
প্রশাসনের নানা অনিয়ম-অনাচার-অবিচারের ঘটনাকে পাঠকের দরবারে হাজির করেছিল ‘নেপথ্য দর্শন’ কলাম। ১৯৬২-তে প্রথম প্রকাশের পর দীর্ঘ দিন দুর্লভ বইটি পুনর্মুদ্রণ করল পারুল প্রকাশনী। যুক্ত হয়েছে একটি রচনাও, ‘নেপথ্য দর্শন ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ’। লেখক অমিতাভ চৌধুরী পঞ্চাশ-ষাট দশকে ‘শ্রীনিরপেক্ষ’ ছদ্মনামে ভারতীয় সাংবাদিকতায় নতুন মোড় এনেছিলেন। গ্রন্থপ্রকাশ উপলক্ষে এই অশীতিপর সাংবাদিককে সংবর্ধনা জানানো হবে যোধপুর পার্কের বাড়িতে, ২৪ জুন সন্ধে ছ’টায়। উপস্থিত থাকবেন প্রবীণ জননেতা কাশীকান্ত মৈত্র, ইতিহাসবিদ রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায়।
অভী স্মরণে
অভী দত্ত মজুমদার শুধু সাহা ইনস্টিটিউটের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ছিলেন না, বেশি পরিচিত ছিলেন সমাজসচেতন, গণতন্ত্রপ্রেমী নাগরিক হিসেবে। মাত্র ৪৫ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন অভী, ২০১৩-র ডিসেম্বরে। তাঁরই স্মৃতিতে বক্তৃতার আয়োজন ফ্রেন্ডস অব ডেমোক্র্যাসি-র। দুই বক্তা পরিবেশবিদ কল্যাণ রুদ্র ও ইতিহাসবিদ অনুরাধা রায়। ঔপনিবেশিক আমল থেকে কী ভাবে ‘উন্নয়ন’ বাংলার পরিবেশের ক্ষতি করেছে, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত থেকে নেহরুর শিল্পায়ন পেরিয়ে আজ অবধি পরিবেশের প্রশ্নটি কোথায় দাঁড়িয়ে, সে বিষয়ে বলবেন কল্যাণ রুদ্র। আর অনুরাধা রায়ের বক্তব্যের শিরোনাম, ‘হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক: ইতিহাসের বিড়ম্বনা, ইতিহাসের উত্তরণ’। বাংলা আকাদেমি সভাঘর, ২৫ জুন পাঁচটায়।
সমর্পণ
অসময়ে সমর্পণের চলে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি তার আত্মজন। শুধু মেধাবীই নয়, ওর সৃজনশীলতা ছিল অসাধারণ। কুইজ, বক্তৃতা, অভিনয়, লেখার পাশাপাশি সমর্পণ দক্ষ ছিল দাবা, সাঁতার, ক্যারাটে, ঘোড়ায় চড়া কি রাইফেল চালনাতেও। ছিল নেতৃত্ব দেওয়ার সহজাত ক্ষমতা। মাত্র সতেরো বছর বয়সে হঠাৎ চলে গেল সে। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে ওর বাবা-মা হাজার সমর্পণের অভিভাবক হয়ে ওঠার প্রতিজ্ঞা নিয়ে গড়ে তোলেন সমর্পণ বসু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট, ২০০৮-এ। সারা বছর ধরে শিশুদের লেখাপড়া, স্বাস্থ্যশিবির, পরিবেশ সচেতনতা, নিয়ে কাজের সঙ্গেই খাবার-খেলনা-শীতবস্ত্র বিতরণ চলে। আয়লা দুর্গতদের ত্রাণেও ছুটে গিয়েছিল এই ট্রাস্ট। রয়েছে ওদের নিজস্ব সাইট www.samarpann.org। লক্ষ্য একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আবাসিক বিদ্যালয় গড়ে তোলা। কাজ চলছে প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের। ২৪ জুন সংস্থা গৃহে একটি অনুষ্ঠানে বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বৃত্তি ও পাঠসামগ্রী দেওয়া হবে ছাত্রছাত্রীদের।
নেপালের জন্য
আর্থিক সাহায্যের সঙ্গে, নেপালের জন্য এখন প্রয়োজন সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনও— বলছিলেন ‘ফ্রিড’-এর তরফে সোমনাথ পাইন। ও দেশের হস্তশিল্পের বিশিষ্ট কেন্দ্র ভক্তপুর ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফ্রিড চেষ্টা করছে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীদের পাশে দাঁড়াতে। আয়োজিত হয়েছে সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘কলকাতা কনসার্ট ফর নেপাল’, ২৮ জুন সন্ধেয় নজরুল মঞ্চে। থাকবেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, অজয় চক্রবর্তী, তন্ময় বসু, রাশিদ খান, কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, বাবুল সুপ্রিয়, ভায়োলিন ব্রাদার্স প্রমুখ। সহায়তায় নেপাল ট্যুরিজ্ম বোর্ড। অন্য দিকে দক্ষিণ কলকাতার ডেকোরেটর্স অ্যাসোসিয়েশন গড়িয়া-সোনারপুর অঞ্চলের ডেকোরেটরদের থেকে সংগৃহীত অর্থ তুলে দিল কলকাতার নেপাল দূতাবাসের হাতে।
অনুপ্রাণিত
বৈষ্ণব কবিদের দ্বারা অনুপ্রাণিত রবীন্দ্রনাথ লেখেন ‘ভানুসিংহের পদাবলী’। ২৬ জুন রবীন্দ্রসদনে এ থেকেই নিবেদিত হতে চলেছে ‘ভানুসিংহ বন্দিছে’। শিল্পী মনোজ ও মধুবনী চট্টোপাধ্যায়। আয়োজনে ‘ডাকঘর’। অন্য দিকে হিন্দুস্তান রেকর্ড থেকে বেরল রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম ‘আনন্দম’। বৈদিক মন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে রবীন্দ্রনাথ গানগুলি লিখেছিলেন। এতে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে রয়েছে বৈদিক মন্ত্র। পাঠে বরুণ চন্দ। গানে দেবাশিস রায়চৌধুরী ও রোহিনী রায়চৌধুরী।
বাঙালি ও বাংলা
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার জন্য অনেক ছেলেমেয়েই বাংলা সাহিত্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কলেজ স্ট্রিট পাড়ায় রোজ যত বই প্রকাশিত হয়, তার ক’টা পাঠকের কাছে পৌঁছয়? তা হলে বাংলায় যাঁরা লিখছেন তাঁদের ভবিষ্যৎ কী? সম্প্রতি বাংলা আকাদেমি সভাঘরে একটি আড্ডা ‘বাঙালি লেখকের ভবিষ্যৎ’-এ প্রশ্নগুলো উঠে এল। উঠল প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা-অসহযোগিতার কথাও। সভার শেষে সবাই একমত, একনিষ্ঠ ভাবে লিখে যাওয়াটাই আসল কথা, পাঠকই খুঁজে নেবেন তাঁর লেখককে। ছিলেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী, অমর মিত্র, অরিন্দম বসু, সামরান হুদা ও সাদিক হোসেন। মাতৃভাষা থেকে ছোটদের দূরে সরে যাওয়া নজরে পড়েছে ‘সুখচর পঞ্চম রেপার্টরি থিয়েটার’-এর কাছেও, ওদের নাটকের স্ক্রিপ্ট মুখস্থ করাতে গিয়ে। সোদপুর স্টেশনের কাছে ওদের আর্ট গ্যালারি ‘জলসাঘর’-এ তৈরি হল বাংলা বইয়ের গ্যালারি ‘বাংলা’। থাকছে বাছাই করা প্রায় হাজার খানেক বই। ছোটরা দেখার সুযোগ পাবে। পছন্দ হলে বই এনেও দেবে সংস্থা। সম্প্রতি এর উদ্বোধন করলেন শঙ্খ ঘোষ (সঙ্গের ছবি)।