এ বার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল-সহ তৃণমূল কাউন্সিলদের বিরুদ্ধে নারকেলডাঙা থানায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হল। কাঁকুড়গাছির নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিতের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। পরেশ ছাড়াও কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বস্তি) স্বপন সমাদ্দার এবং ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া ঘোষেরও নাম রয়েছে অভিযুক্তের তালিকায়।
কী থেকে অশান্তির সূত্রপাত? বিশ্বজিতের অভিযোগ, গাছ কাটার নাম করে স্বপন, পাপিয়াদের গুন্ডাবাহিনী এসে এলাকায় উপদ্রব করে। গাছ কেটে তার ডাল তাঁদের ওখানকার গ্যারাজের গাড়ির উপর ফেলে। শুধু তা-ই নয়, এলাকার বিদ্যুতের তারের উপরও গাছের ডাল পড়ে। বিশ্বজিতের কথায়, ‘‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। আমি ওদের বারণ করি। তা সত্ত্বেও আমাদের ওখানকার বিদ্যুতের তারের উপর গাছের ডাল কেটে ফেলেন। কিছু ডাল আমার সামনে পড়ে।’’ এখানেই শেষ নয়। বিশ্বজিতের অভিযোগ, এর পরেই ওই গুন্ডাবাহিনী তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এমনকি মারধরও করে। মারধরের কারণে বিশ্বজিতের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগে। মেডিক্যাল পরীক্ষাও করিয়েছেন বলে জানান বিশ্বজিৎ। তবে এই অভিযোগ সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন পরেশ। আনন্দবাজার ডট কম-কে তিনি বলেন, ‘‘কে বিশ্বজিৎ সরকার আমি চিনি না। আর কী অভিযোগ হয়েছে, তা-ও জানি না।’’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময়েই ভোট পরবর্তী হিংসায় কাঁকুড়গাছির অভিজিৎ খুন হন বলে অভিযোগ। পরিবারের অভিযোগ, ফল প্রকাশের পরেই গলায় তার পেঁচিয়ে ও পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় অভিজিৎকে। প্রথমে নারকেলডাঙা থানার পুলিশ ওই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছিল। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে পুলিশের থেকে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে।
আরও পড়ুন:
সেই মামলাতে নাম জড়ায় পরেশ, স্বপন এবং পাপিয়াদের। গত ২ জুলাই দ্বিতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেখানে অভিযুক্তদের তালিকায় নাম রয়েছে বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক এবং কাউন্সিলরদের। বিষয়টি গড়ায় কলকাতা হাই কোর্ট পর্যন্ত। আদালতে পরেশেরা দাবি করেন, দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থে ও কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে তাঁদের। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, আগামী ১ অগস্ট অথবা, হাই কোর্ট নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রাখবে নিম্ন আদালত। এই আবহেই এ বার খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল পরেশদের বিরুদ্ধে।