Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ওটিপি দিয়ে প্রতারকের জালে ব্যবসায়ী

অনলাইন লেনদেন বন্ধ করার পরেও তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা জালিয়াতি হওয়ায় তাজ্জব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে তাঁরা অবাক এক বার মাত্র ওটিপি নিয়ে বারবার টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায়।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২৭
Share: Save:

এমন ভুল কখনও করবেন না বলে পণ ছিল তাঁর। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেই ভুলই করে বসলেন। বন্ধ হয়ে যাওয়া জীবন বিমার টাকা ফেরত পেতে মোবাইলে আসা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) বলে দেন সোদপুরের ব্যবসায়ী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ফল, দু’দিনে আশিসবাবুর অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে প্রায় দু’লক্ষ টাকা। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের সাইবার অপরাধ থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।

অনলাইন লেনদেন বন্ধ করার পরেও তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা জালিয়াতি হওয়ায় তাজ্জব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে তাঁরা অবাক এক বার মাত্র ওটিপি নিয়ে বারবার টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায়। তবে পুলিশ জেনেছে, একটি মোবাইল ওয়ালেট তৈরি করে বারবার সেই অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়েছে জালিয়াতেরা। শেষ পর্যন্ত রবিবার, ছুটির দিনে ব্যাঙ্ক খুলে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে সব লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আশিসবাবু জানান, ২০০৫ সালে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জীবন বিমার পলিসি করেন তিনি। কিন্তু এক বছরের বেশি তা চালাতে পারেননি। শুক্রবার তিনি ওই ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে জানতে চান, পলিসির টাকা তিনি ফেরত পাবেন কি না। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁকে ওই বিমা অফিসের মুম্বইয়ের নম্বরে ফোন করতে বলেন। তিনি ইন্টারনেটে তিনটি নম্বর পান। তার একটি মোবাইল। কিন্তু সেই মোবাইল নম্বরে ফোন করে কোনও সাড়া পাননি।

ল্যান্ডলাইনে ফোন করলে তাঁকে কলকাতার একটি নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। কলকাতার নম্বরে ফোন করলে তাঁকে জানানো হয়, যেহেতু তিনি পলিসি তিন বছর চালাননি, তাই নিয়ম অনুযায়ী তিনি ওই টাকা ফেরত পাবেন না। অভিযোগ, সেই ফোন কল শেষ হতেই ওয়েবসাইটে পাওয়া মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে। নিজেকে ওই বিমা কোম্পানির এগজিকিউটিভ অফিসার পরিচয় দিয়ে আশিসবাবুর সমস্যা জানতে চান এক ব্যক্তি। তিনিও ঘটনাটি জানান। ফোনের অপর প্রান্তের যুবক বলেন, নিজের টাকা ফেরত পাওয়া তাঁর অধিকার। আশিসবাবুকে জানানো হয়, অনলাইনে তাঁকে ১০ হাজার টাকা পাঠানো হবে। তাঁর মোবাইলে একটি ওটিপি যাবে। সেটি তাঁকে জানালেই টাকা ঢুকে যাবে অ্যাকাউন্টে।

আশিসবাবু বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা শুনে পণ করেছিলাম, কাউকে ওটিপি বলব না। কী যে হল, ওটা বলে ফেললাম।’’ সে দিনই সন্ধ্যায় ৯০ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়। শনিবার সকালে থানায় অভিযোগ করে ব্যাঙ্কের শাখায় যান। তাঁকে জানানো হয়, নেট ব্যাঙ্কিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সন্ধ্যায় ফের এক লক্ষ টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হয়। রবিবার সন্ধ্যায় ফের টাকা সরানোর চেষ্টা হয়। তবে তা আর সফল হয়নি।

পুলিশ মনে করছে, আশিসবাবুর মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে একটি মোবাইল ওয়ালেট তৈরি হয়। পরে ওটিপি-র মাধ্যমে আশিসবাবুর নম্বর পরিবর্তন করে ওয়ালেটে নিজেদের নম্বর জুড়ে নেয় জালিয়াতেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE