Advertisement
E-Paper

ট্র্যাফিক কর্মীকে টেনে নিয়ে জোরে ছুটল ক্যাব

আচমকা এমন ঘটায় হতবাক হয়ে যান সেখানকার পুলিশকর্মী থেকে পথচলতি মানুষ। এর পরেই শুরু হয় ক্যাবের খোঁজ। রেডিও ট্রান্সমিটারে ছড়ায় বার্তা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৫:২৩
(বাঁ দিকে) সেই সিভিক ভলান্টিয়ার। (ডান দিকে) ধৃত চালক। নিজস্ব চিত্র

(বাঁ দিকে) সেই সিভিক ভলান্টিয়ার। (ডান দিকে) ধৃত চালক। নিজস্ব চিত্র

সিগন্যাল ভেঙেছে গাড়ি। সিভিক ভলান্টিয়ার তাই আটকেছিলেন এক ক্যাব-চালককে। একটি দরজা খুলে চালকের সঙ্গে কথা বলতে যেতেই ঘটল বিপত্তি। আচমকা জোর করে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের হাত ধরে টেনে গাড়িতে তুলে নেন ক্যাব-চালক। তীব্র গতিতে ছুটতে শুরু করে ক্যাব।

আচমকা এমন ঘটায় হতবাক হয়ে যান সেখানকার পুলিশকর্মী থেকে পথচলতি মানুষ। এর পরেই শুরু হয় ক্যাবের খোঁজ। রেডিও ট্রান্সমিটারে ছড়ায় বার্তা। বৃহস্পতিবার দিনেদুপুরে এমনই ঘটল সল্টলেকের নিক্কো পার্ক থেকে সুকান্তনগরগামী রাস্তায়।

অবশেষে দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ মা উড়ালপুলের উপরে সেই ক্যাবটি আটক করেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা। উদ্ধার করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সুনীল দত্তকে। গ্রেফতার হন চালক আবসার হোসেন।

যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি শুরু হতেই পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপরে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এ দিনের ঘটনা সে সব ছাপিয়ে গিয়েছে বলেই মন্তব্য করলেন ট্র্যাফিক-কর্মীরা।

আরও পড়ুন: রোগী নেই ৩ দিন, জানেই না মেডিক্যাল

উদ্ধারের পরে সুনীল জানান, সিগন্যাল ভেঙেছেন বলে ১০০ টাকা ফাইন হবে। এমনটাই তিনি জানিয়েছিলেন ওই চালককে। কিছু দূরে দাঁড়ানো অফিসারদের কাছে তাঁকে নিয়ে যেতে চান সুনীল।

অভিযোগ, তখনই সুনীলের হাত ধরে টান দেন ওই চালক। সুনীল চালকের পাশের আসনে গিয়ে পড়তেই গাড়ির দরজা বন্ধ করে দেন আবসার। গাড়ি ছুটতে শুরু করে ১০০ কিলোমিটার বেগে। সুনীল প্রতিবাদ করলে বেড়েছে গতি। বেশ কিছু ক্ষণ সল্টলেকের ভেড়ি এলাকায় ঘুরপাক খাওয়ার পরে চালক গাড়ি নিয়ে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসে উঠে পড়েন।

তখনই সল্টলেকে নিজের বাসভবন থেকে খাদ্য ভবনে যাচ্ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই তাঁর সঙ্গে থাকা কর্মীরা ওয়্যারলেসে ঘটনাটি জানতে পারেন। তিনি বলেন, ‘‘নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে ঘটনা শুনেই ক্যাবটি আটকাতে বলি।’’ মা উড়ালপুলের কিছুটা আগে মন্ত্রীর গাড়ি দাঁড় করিয়ে ক্যাবটি ধাওয়া করেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা। উড়ালপুলের উপরে অবশেষে আটকানো যায় সেই ক্যাব।

দেখা যায়, তখন সিভিক ভলান্টিয়ারকে রীতিমতো মারধর করছেন চালক। এমনই জানান মন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক রক্ষী। ক্যাব-চালক ধরা পড়ার খবর পেয়ে আসেন কলকাতা পুলিশের কর্মীরাও। ক্যাব-চালককে নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর দক্ষিণ থানায়।

আগে কখনও সল্টলেক, লেকটাউন, কখনও রাজারহাট কিংবা নিউ টাউনে ঘটেছে কর্তব্যরত পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধরের ঘটনা। তবে এ বার আরও বড় কিছু ঘটে যেতে পারত বলে আশঙ্কা সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের। তাঁরা বলেন, মন্ত্রীর রক্ষীদের নজরে পড়ায় এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচে গেলেন সুনীল। না হলে কী যে হতো কে জানে? পুলিশ তবু কড়া বার্তা দিয়েছে আইনভঙ্গকারীদের উদ্দেশে। এক কর্তা সাফ জানিয়ে দেন, যানবাহন চলাচলে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পুলিশ কোনও শিথিলতা বরদাস্ত করবে না।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত আবসারের বিরুদ্ধে সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধর, সরকারি কাজে বাধা, অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আজ, শুক্রবার বিধাননগর আদালতে তোলা হবে ধৃতকে। তাঁকে সাত দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার আবেদনও জানাবে বিধাননগর পুলিশ।

CAB Traffic civic volunteer সিভিক ভল্যান্টিয়ার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy