—ফাইল চিত্র।
ভোটাভুটিতেই কলকাতা পুরসভার মেয়র নির্বাচন হবে সোমবার। সেই নির্বাচনের উপরে শুক্রবার কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। তবে বিচারপতি দেবাংশু বসাক জানিয়ে দিয়েছেন, মেয়র নির্বাচনের ভবিষ্যৎ মামলার ফলাফলের উপরেই নির্ভর করবে।
মেয়র নির্বাচন সংক্রান্ত সংশোধনী আইন বাতিলের আবেদন জানিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে বিচারপতি বসাক এ দিন সব পক্ষকে হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। ১৭ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি হবে।
সংশোধনী আইন বাতিলের আর্জি জানিয়ে মামলা করেছেন ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিলকিস বেগম। তাঁর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এ দিন সওয়াল করেন, সংশোধনী সংবিধানসম্মত নয়। কারণ, ১৯৮০ সালে সংবিধানের ৭৪ নম্বর সংশোধনীতে বলা হয়, পঞ্চায়েত, পুরসভা, কর্পোরেশন স্বায়ত্তশাসনের অধিকারী। মেয়রকে কোনও ওয়ার্ড থেকে জনগণের ভোটে জিতে আসতে হবে। কে মেয়র হবেন, তা নির্বাচন করবেন নির্বাচিত কাউন্সিলরেরা। মেয়র নির্বাচন কী ভাবে হবে, তা-ও বলা আছে ওই সংশোধনীতে।
আরও পড়ুন: বাঁধন খোলার সাধনেই মত্ত শহর
অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত অবশ্য দাবি করেন, পুর আইন সংশোধনের ক্ষমতা আছে রাজ্যের হাতেই। সেই ক্ষমতা-বলেই মেয়র নির্বাচন সংক্রান্ত সংশোধনী আইন পাশ হয়েছে বিধানসভায়। তা বাতিল করার প্রয়োজন নেই।
বিকাশবাবু যুক্তি দেখান, মেয়র নির্বাচন সংক্রান্ত সংশোধনী আইনে বলা হয়েছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি, এমন কেউ মেয়র-পদে নির্বাচিত হতে পারেন। কিন্তু তাঁকে নির্বাচিত হওয়ার ছ’মাসের মধ্যে কোনও ওয়ার্ড থেকে ভোটে জিতে আসতে হবে। ওই আইনজীবীর প্রশ্ন, সংবিধানের ৭৪তম সংশোধনী না-মেনে রাজ্য সরকার কী ভাবে পুর আইন সংশোধন করতে পারে? তাঁর বক্তব্য, এ ভাবে আইন সংশোধন করা যায় না। তাই রাজ্য সরকারের সংশোধনী আইন বাতিল করা হোক।
আরও পড়ুন: ফিরহাদের জন্য ভোট কি জানুয়ারিতে
আবেদনকারীর কৌঁসুলি জানান, সংবিধান বলছে, পুর বোর্ড গঠিত হবে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে। নির্বাচিত কোনও কাউন্সিলরকে মেয়র হিসেবে নির্বাচন করবেন অন্য কাউন্সিলরেরা। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের মতো কাউকে নিয়োগ করার ক্ষমতা দেয়নি সংবিধান।
এজি যুক্তি দেখান, পুর আইন সংশোধনের ক্ষমতা রাজ্যের হাতে রয়েছে বলেই মেয়র নির্বাচন সংক্রান্ত সংশোধনী আইন বিধানসভায় পাশ হয়েছে। সংশোধনীতে বলা আছে যে, নির্বাচিত না-হয়েও যে-কেউ মেয়র হতে পারেন। তবে তাঁকে ছ’মাসের মধ্যে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। পুর আইনে এই ধরনের সংশোধনী আনা যাবে না, এমন কথা সংবিধানে নেই।
কলকাতা পুরসভার আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতে জানান, পুর আইন পুরোপুরি রাজ্যের বিষয়। যা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত এবং বিধানসভা যাকে অনুমোদন দিয়েছে, তা বাতিলের আবেদনই জানানো যায় না।
মেয়র-পদে তৃণমূল প্রার্থী ফিরহাদ হাকিম এ দিন বলেন, ‘‘মামলা করে সিপিএম আসলে বিজেপির সুবিধা করে দিয়েছে। আদালত যদি মেয়র-পদে আমার নির্বাচনের উপরে স্থগিতাদেশ দিত, তা হলে বিজেপির মীনাদেবী পুরোহিত মেয়র নির্বাচিত হতেন। সিপিএম-বিজেপির গোপন বোঝাপড়া এতে স্পষ্ট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy